দিল্লি, ২৫ ডিসেম্বর– দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে লোকসভা ভোট। তাই তাড়াহুড়ো শুরু হয়ে গিয়েছে সব রাজনৈতিক দলগুলিই । একদিকে বিজেপি তো অন্যদিকে কংগ্রেস ভোটের প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে ময়দানে। মোদি থেকে শাহ যেমন নেমেছেন ম্যারাথন বৈঠকে, ঠিক তেমনই দফায় দফায় বৈঠকে বসছে ‘ইন্ডিয়া’ জোটও। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী মুখ হিসেবে মল্লিকার্জুন খাড়গের নাম প্রস্তাব করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় । কিন্তু সেই আসন রফার মতোই এর প্রস্তাবেও অনীহা জোট সঙ্গী এনসিপির। পরোক্ষভাবে মমতার সেই প্রস্তাবের বিরোধিতা করতেই শোনা গেল এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারকে। গত সপ্তাহেই দিল্লিতে বিরোধী জোটের বৈঠকে খাড়গের নাম প্রস্তাব করেন মমতা। মমতার সেই প্রস্তাব খারিজ করে শরদ পাওয়ারের দাবি, প্রধানমন্ত্রীর মুখ লাগবে না, এছাড়াই জয় সম্ভব।
মঙ্গলবার মুম্বইতে এক সাংবাদিক বৈঠকে জোট সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে শরদ পাওয়ার ১৯৭৭ এর লোকসভা মনে করিয়ে বলেন সেই সময়ও কোনও প্রধানমন্ত্রী মুখ ছিল না । তারপরও জিত আসে এবং ভোটের পর মোরারজি দেশাইকে প্রধানমন্ত্রী করা হয়। তাই পদপ্রার্থী হিসেবে কাউকে সামনে না রাখলেও অসুবিধা হবে না বলেই মনে করেন তিনি। অর্থাৎ প্রবীণ রাজনীতিকের কথাতেই স্পষ্ট, মমতার প্রস্তাব মনে ধরেনি তাঁর। মমতার প্রস্তাব কার্যত খারিজ করে পাওয়ারের কথায়, ‘মানুষ যদি পরিবর্তন আনতে চায়, তাহলে পরিবর্তন আসবেই।
তবে সূত্র বলছে বৈঠকে মমতা নাম প্রস্তাব করার পর খোদ মল্লিকার্জুন খাড়গেই এর বিরোধিতা করেন। তিনি বলেছিলেন, সবার আগে জয় কীভাবে আসবে, তার ওপর নজর দেওয়া প্রয়োজন। তারপর প্রধানমন্ত্রী পদ নিয়ে আলোচনা হবে। মমতার যেদিন এই প্রস্তাব রাখেন সেইদিন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার বৈঠক শেষ হওয়ার আগেই বেরিয়ে গিয়েছিলেন বলে সূত্রের খবর। আর এদিন শরদ পাওয়ারও হাঁটলেন সেই পথেই।
যদিও জোট সঙ্গীদের এই অন্তর্দ্বন্দ্বে বলতে ছাড়েনি বিজেপি। পাওয়ারের এই বক্তব্য যে বিজেপিকে নতুন অস্ত্র তুলে দিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শরদের কথা টেনে বিজেপি বোঝাতে চেয়েছে, বিরোধী জোটের মধ্যে কতটা ফাটল তৈরি হয়েছে। বিজেপির মুখপাত্র শেহজাদ পুনাওয়ালা এক্স মাধ্যমে লিখেছেন, মমতা দিদি যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তাতে খুশি ছিল না কংগ্রেসও। তবে শরদ পাওয়ার স্পষ্ট জানিয়েছেন, বিরোধী জোটের সঙ্গে কোনও বিরোধিতা করবেন না তিনি।