কলকাতা, ১ নভেম্বর – শুভেন্দু অধিকারীর দাদা কৃষ্ণেন্দু অধিকারীকে পাঠানো পুলিশের নোটিস খারিজ করে দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বুধবার পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর পর্যবেক্ষণ, পুলিশ দাসের মতো কাজ করছে।
আদালতের অনুমতি ছাড়া তাঁকে এই ধরনের নোটিস পাঠানো যাবে না বলে জানান বিচারপতি। আদালতের নির্দেশ অমান্য করলে পুলিশের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। নিজের বেতন থেকে জরিমানা দিতে হবে। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, “এসডিপিও তাঁর পোশাকে থাকা অশোকস্তম্ভের সম্মানরক্ষা করেননি। তিনি দাসের মতো কাজ করেছেন।” এগরার এসডিপিও-কে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
কাঁথি পুরসভার গ্রিন সিটি মিশনে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত করছে রাজ্য পুলিশ। মেচাদা-দিঘা বাইপাসে বাতিস্তম্ভ লাগানোয় দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলায় সাক্ষী হিসাবে নোটিস পাঠানো হয় কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর বড় ছেলে কৃষ্ণেন্দু অধিকারীকে। একই মামলায় শিশিরের আর এক ছেলে তথা তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীর স্ত্রী সুতপা অধিকারীকেও নোটিস দেয় পুলিশ। এ নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন কৃষ্ণেন্দু। বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ওই মামলার শুনানিতে পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করা হয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সংশ্লিষ্ট মামলায় পুলিশ ঠিক কাজ করেনি। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এগরার এসডিপিওকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেছেন। তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘উর্দিতে যে অশোকস্তম্ভ রয়েছে, তার সম্মানরক্ষা করেননি এসডিপিও। দাসের মতো কাজ করেছে পুলিশ।’’ এখানেই শেষ নয়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ ছাড়া সংশ্লিষ্ট মামলায় কৃষ্ণেন্দুকে আর কোনও নোটিস পাঠাতে পারবে না পুলিশ। এই প্রসঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যদি পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করে, তার বিরুদ্ধে আমি পদক্ষেপ করব।’’
মেচেদা-দিঘা বাইপাসে এলইডি আলো লাগানো নিয়ে আর্থিক তছরুপের অভিযোগে ২০২২ সালে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের হয়। ২০১৭-১৮ সালে এই আলো লাগানো হয় বলে অভিযোগ। ২-৩ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এদিন নোটিস পাঠিয়ে সাক্ষী হিসাবে ডেকে পাঠানো হয় শুভেন্দু অধিকারীর দাদা কৃষ্ণেন্দু অধিকারীকে। চার বছর পর কেন পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলেন মামলাকারী, তা স্পষ্ট নয় বলে মন্তব্য বিচারপতির। তাঁর প্রশ্ন, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬০ নম্বর ধারা অনুযায়ী কাউকে ডেকে পাঠানো হলে তাঁর আয়করের ফাইল কেন প্রয়োজন? পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে ‘মেরুদণ্ডহীন’ বলেও উল্লেখ করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।