সোমবার বিশেষ অধিবেশনের শুরুতে দীর্ঘ ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। সংসদ ভবনের আট দশকের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে নেহরুর অবদানের কথা তুলে ধরেন মোদি। নেহরু মন্ত্রীসভার প্রশংসাও করেন।অধীর চৌধুরী এদিন নেহরুর গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বিরোধীদের কথা শুনতেন নেহরু। প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার সময় কাউকে কটাক্ষ বা তাচ্ছিল্য করতেন না। কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, ‘এমনকী প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুও সংসদে বক্তৃতার সময়সীমা পেরিয়ে গেলে স্পিকার বেল বাজাতেন।’
নিজের ভাষণে গণতন্ত্র নিয়ে বলতে গিয়ে নেহরুর উদ্ধৃতি দেন অধীর। বলেন, “সংসদীয় গণতন্ত্রের সাফল্য বহুবিধ বিষয়ের উপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে রয়েছে কর্মদক্ষতা, বৃহত্তম সহযোগিতার বাতাবরণ, আত্মনিয়ন্ত্রণ, খুব বেশি দেশে যা সফল হয়নি।” অধীরের বক্তব্য, ভারতের এই সাফল্য কেবল সংসদ সদস্যদের নয়, দেশের আমজনতা গণতন্ত্রে আস্থা রাখাতেই সাফল্য এসেছে।
এদিন তাঁর বক্তব্যে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে নিয়েও বক্তব্য রাখেন অধীর। এক সময়ে মনমোহন সিংকে মৌনমোহন বলে কটাক্ষ করতেন তৎকালীন বিরোধী দল বিজেপির নেতানেত্রীরা। অধীর চৌধুরী বলেন, মনমোহন সিং চুপ করে থাকতেন না, তিনি কথা কম, কাজ বেশি করতেন। অধীর বলেন, পোখরানের সময় বিদেশিরা আমাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সেই সময় বিশ্বকে বার্তা দিয়েছিলেন অটলজি।সেই পরমাণু পরীক্ষার পর আমাদের উপর যে নিষেধাজ্ঞা চাপে, তা সরিয়েছিলেন মনমোহন সিং। তিনি বুঝিয়েছিলেন , এটি দেশের জন্য হিতকর।
বিশেষ অধিবেশন নিয়ে সরকার অন্ধকারে রেখেছিল বলেও অভিযোগ করেন অধীর। তিনি বলেন, ‘এটি সংসদের সাধারণ অধিবেশন, নাকি বিশেষ অধিবেশন তাই আমরা জানি না। সংবাদ মাধ্যমের কাছ থেকে আমাদের জানতে হচ্ছে। জিরো আওয়ারে সাংসদদের প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেওয়ার অনুমতিও দেওয়া হয়নি।’
আদানি কাণ্ডে জেপিসি তদন্তের দাবির পাশাপাশি মণিপুরের হিংসা, মূল্যবৃদ্ধি, হরিয়ানার গোষ্ঠী সংঘর্ষ, চিনের আগ্রাসন নীতির মতো ন’টি বিষয় সংসদের এই অধিবেশনে আলোচনা হোক, এই দাবি জানিয়ে কংগ্রেসের সংসদীয় দলনেত্রী সোনিয়া গান্ধি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠান।সেই চিঠিতে উল্লেখ ছিল জাতগণনার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনার দাবিও। সোমবারের বৈঠকে এই প্রতিটি দাবিই তুলে ধরেন অধীর চৌধুরী।