দিল্লি, ৬ মার্চ– ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বিরোধীদের অবস্থান ক্রমশই জট পাকাচ্ছে। দিল্লি তথা বাংলার অবস্থান পরিষ্কার। কারণ আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের পর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ঘোষণা করেছেন, ২৪-এর ভোটে তাঁর দলও ‘একলা চলোর’ পথে। অন্যদিকে, জোটের মুখ হতে সক্রিয় একাধিক নেতা ও মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে রাহুলের নতুন বার্তা নতুন জোট সম্ভাবনা নিয়ে এক নতুন ধোঁয়াশার সৃষ্টি করল ।
লন্ডন সফররত রাহুল গান্ধি সেখানে এক সভায় বলেছেন, ‘বিরোধীদের একত্রিত করতে কংগ্রেসের কাছে কিছু অভিনব ফরমুলা রয়েছে। তবে এখনই সেগুলি প্রকাশ করে আকর্ষণ নষ্ট করতে চাই না।’ লন্ডনে ইন্ডিয়ান জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলাপচারিতায় ওয়েনাডের কংগ্রেস সাংসদ বিবিসি ডকুমেন্টারি নিষিদ্ধ করার বিতর্ক, সীমান্তে চিনের আগ্রাসন, মোদি সরকারের পরিচালনা, ভারত জোড়ো যাত্রার অভিজ্ঞতা এবং বিরোধী রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন। ফের বলেছেন, ‘ভারতে গণতান্ত্রিক কাঠামো নৃশংস আক্রমণের মুখে পড়েছে।’
কংগ্রেস নেতার কথায়, দেশে মিডিয়া, প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, বিচার বিভাগ, সংসদ শাসকের আক্রমণের মুখে। বিরোধীদের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, চলতি পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা থেকেই বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, কতিপয় মানুষের দেশের সম্পদ হস্তগত করা এবং নারীর প্রতি সহিংসতার মতো সমস্যাগুলি লোকসভা নির্বাচনের অন্যতম ইস্যু হয়ে উঠবে।
তবে যতই বিরোধীদের নিয়ে কথা বলুন জোট নিয়ে রহস্য বজায় রেখেই গেছেন তিনি। বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করতে কংগ্রেস কী ভাবছে তা স্পষ্ট করেননি প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি।
তাঁর ভারত জোড়ো যাত্রা সফল হলেও তারপর থেকে কংগ্রেস গুটিয়ে আছে বলে একাধিক বিরোধী দল ইদানীং সরব হয়েছে। তাঁদের মধ্যে অন্যতম কংগ্রেসের ঘরের লোক বলে পরিচিত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। পাটনায় এক সভায় এই ব্যাপারে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘আমরা সবাই কংগ্রেসের মুখ চেয়ে আছি। অথচ তারা কোনও উচ্চবাচ্যই করছে না।!
লন্ডনের সভায় রাহুল বলেছেন, আমি মনে করি আমরা যদি বিজেপির চেয়ে ভিন্ন ধারণা নিয়ে বিরোধীদের একত্রিত করতে পারি তবে নির্বাচনে খুব ভাল ফল করব।
কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে রায়পুরের মহা সমাবেশ থেকে কংগ্রেস মোদি সরকারের বিরোধিতা এবং বিরোধী জোট নিয়ে জোরালো কোনও বার্তা দেয়নি। তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর সমালোচনা শুরু হয়েছে। সেই সমালোচনায় হ্রাস টানতেই রাহুল বিরোধী জোট নিয়ে রহস্য তৈরি করলেন কিনা তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের কারও কারও ধারণা, পরিস্থিতি আঁচ করে কংগ্রেস রায়পুরের ঘোষণা থেকে সরে এসে জোটের নেতৃত্ব নিয়েও নরম অবস্থান নিতে পারে। কারণ, দল বুঝতে পারছে বিরোধী শিবিরে তারা ক্রমশ একঘরে হয়ে পড়ছে। কংগ্রেসকে বাদ রেখে বিরোধী জোট তৈরির পথে এগিয়ে গিয়েছে বেশ কিছু দল। সেই তালিকায় এমনকী নীতীশ কুমার, তেজস্বী যাদবেরাও আগ্রহী হয়ে উঠেছে বলে খবর।