দিল্লি, ২২ ডিসেম্বর – ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকের পর প্রথমবার বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সঙ্গে ফোনে কথা বললেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি। জেডিইউ সূত্রে খবর , শুক্রবার সকালে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ফোন করেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে। ক্ষুব্ধ জেডিইউ নেতাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন রাহুল গান্ধি। কংগ্রেসের অবস্থান কী, তাও স্পষ্ট করে বোঝান তিনি। পাশাপাশি, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে নির্বাচনী কৌশল কি হবে তা নিয়েই মূলত আলোচনা হয় বলে রাজনৈতিক মহলের চর্চা। ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের সংঘবদ্ধ করতে এবং জোটকে আরও শক্তিশালী করতে কি কি করা প্রয়োজন সেই নিয়েও কথাবার্তা হয় দুই নেতার। এর পাশাপাশি বিরোধী জোটের প্রধানমন্ত্রীর মুখ নিয়ে কংগ্রেসের কী অবস্থান রয়েছে তা নিয়েও কথা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিহারের মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ নিয়েও আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে।
১৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে চতুর্থ দফার বৈঠক ছিল বিরোধী শিবির ইন্ডিয়া জোটের। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে ইন্ডিয়া জোটের প্রধানমন্ত্রী মুখ কে হবেন সেই নিয়ে আলোচনা হওয়ার সময় কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খাড়গের নাম প্রস্তাব করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার প্রস্তাবে সমর্থন জানান আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়াল। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এতেই অসন্তুষ্ট হন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও রাষ্ট্রীয় জনতা দলের প্রধান লালু প্রসাদ যাদব। সূত্রের খবর, খাড়গের নাম প্রস্তাব করতেই নাকি দ্রুত বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মল্লিকার্জুন খাড়গের নাম প্রস্তাব করা হবে তা নাকি আগে থেকে জানতেন না নীতীশ।
নীতীশ কুমারকে রাহুলের ফোন প্রসঙ্গে চর্চায় উঠে আসছে সেদিনের ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করেছেন রাহুল গান্ধি। কারণ আরজেডি সূত্রে খবর, নীতীশ যে ইন্ডিয়া জোটের গুরুত্বপূর্ণ মুখ সে কথা স্বীকার করেছেন রাহুল গান্ধি। নীতীশকে চটালে তাতে জোটেরই ক্ষতি। ইন্ডিয়া জোটের অন্তর্দ্বন্দ্বের বিষয়টিও আরও বেশি করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করবে। তাই প্রশ্ন উঠছে, নীতীশের রাগ কমাতেই কী তড়িঘড়ি তাঁকে ফোন করলেন রাহুল ?
সূত্রের খবর, রাহুল গান্ধি বিহারের মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ নিয়ে নীতীশ কুমারের সঙ্গে কথা বলেন। অন্য দিকে, বিহারের মুখ্যমন্ত্রী রাহুল গান্ধিকে জানান, বৈঠকে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ কে হবেন, তার নাম প্রস্তাব করা হবে, এই বিষয়ে তিনি অবগত ছিলেন না। সেই কারণেই কিছুটা মনোক্ষুণ্ন হয়েছিলেন তিনি।
এনডিএ জোট ভেঙে বেরিয়ে আসার পর থেকেই বিজেপি সবসময়েই বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে কটাক্ষ করেছে তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। যদিও সেই অভিযোগ বারবার অস্বীকার করেছেন নীতীশ কুমার। নীতীশের সেই স্বপ্নভঙ্গ নিয়েই এখন জোর চর্চা চলছে ।
সূত্রের খবর, রাহুলকে আশ্বস্ত করেছেন নীতীশ। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মন্ত্রিসভায় যে কোনও দিন কংগ্রেস কোটার মন্ত্রীর সংখ্যা বাড়াতে তিনি তৈরি। তবে মন্ত্রীসভা সম্প্রসারণে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে লালু প্রসাদ যাদবের সিদ্ধান্তহীনতাকেই নীতীশ দায়ী করেছেন। এরপর আরও এক জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে জেডিইউ ও আরজেডির মধ্যে কি ফাটল বাড়ছে ? কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ গিরিরাজ সিং-এর দাবি, লালু তাঁর ছেলে তেজস্বী যাদবকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী করতে চান। সেই কারণেই তিনি মন্ত্রীসভা সম্প্রসারণের অনুমতি দিচ্ছেন না।