স্বর্ণমন্দিরে থালাবাসন মেজে রাহুলের ‘করসেবা’

অপকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া উচিত রাহুলের, দাবি অকালি দল নেত্রীর 

অমৃতসর, ২ অক্টোবর– রবিবারের রেস অব্যাহত সোমবারও। নিজেকে হিন্দু প্রমাণিত করতেই কি রবিবার হিন্দু ধর্ম নিয়ে নিবন্ধ লিখেছেন রাহুল গান্ধি! সেই ‘সত্যম-শিবম-সুন্দরম’ শীর্ষক নিবন্ধে কংগ্রেস নেতা লিখেছেন, যিনি নির্ভয়ে সত্যের পথে অবিচল থাকতে পারেন, তিনিই প্রকৃত হিন্দু। হিন্দু ধর্ম নিয়ে রাহুলের এই আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যার পর সোমবার তিনি পৌঁছে গেলেন অমৃতসরে স্বর্ণমন্দিরে।

কর্মযোগী রাহুল এবার আধ্যাত্বিক সফরে। কয়েকদিন আগে মেকানিক, ছুতোরের কাজে হাত লাগিয়ে রাহুল প্রমান করতে চেয়েছিলেন তিনি কর্মযোগী মানুষদের মধ্যে একজন। এবার সেই রাহুল সোমবার অমৃতসরে। সেখানে শিখ ধর্মস্থান স্বর্ণমন্দিরে আরাধনা করার পর করসেবা বা স্বেচ্ছাশ্রম দান করেন রাহুল। শিখ ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে তিনিও থালাবাসন মাজেন। ওয়ানাডের কংগ্রেস সাংসদ দিনটা অমৃতসরেই কাটাবেন বলে এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়েছেন পাঞ্জাব প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অমরিন্দর সিং রাজা ওয়ারিং। কংগ্রেস কর্মীদের বলেছেন, রাহুল আধ্যাত্মিক সফরে এসেছেন। ওঁকে একা সময় কাটাতে দিন।


এদিকে, রাহুল একে ব্যক্তিগত সফরে বললেও এই সফর ঘিরে রাজনীতি থেমে থাকেনি। দু’দিন আগেই পাঞ্জাবের আপ সরকার কংগ্রেস বিধায়ক সুখপাল সিং খাইরাকে গ্রেফতার করেছে মাদক ও বেআইনি পথে অর্থ লেনদেনের অভিযোগে। ওই বিধায়কের অভিযোগ, তাঁকে খুন করতে পারে আপ সরকার। কিন্তু রাহুল এই বিষয়ে একটি কথাও এদিন বলেননি। তাতে কংগ্রেসের একাংশ ক্ষুব্ধ। সেই কারণেই রাহুলের সফরের উদ্দেশ্য নিয়ে এক্স হ্যান্ডেলে ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।

তবে রাহুলের এই ‘ব্যক্তিগত’ সফর নিয়ে রাজনীতি টেনে এনেছে অকালি দল। দলের নেত্রী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হসসিমরত কৌর বাদল রাহুলকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন স্বর্ণ মন্দিরে সেনা অভিযান এবং তাঁর ঠাকুমা ইন্দিরা গান্ধি নিহত হওয়ার পর দিল্লি ও আশাপাশে কংগ্রেসের শিখ বিরোধী দাঙ্গার কথা।

উল্লেখ্য, ১৯৮৪ সালে স্বর্ণ মন্দিরে সেনা অভিযান করিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি । স্বর্ণমন্দির তখন ছিল খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গি নেতা ভিন্দ্রাওয়ালের দখলে। শিখ ধর্মীয়স্থানটি জঙ্গি মুক্ত করতে সেনার ‘অপারেশন ব্লুস্টার’ নামে অভিযানে এক-দেড়দিনে প্রায় ৪০০জন নিহত হয়।

ওই ঘটনার বদলা নিতে ইন্দিরার দুই ব্যক্তিগত শিখ দেহরক্ষী তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে দিল্লিতে দিন সাতেক ধরে চলে শিখ নিধন যজ্ঞ। অকালি নেত্রীর কথায়, রাহুলের উচিৎ ঠাকুমা ও দলের অপকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া।