দেরাদুন, ৬ নভেম্বর – ভোটের মুখে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে দেশের তাবড় নেতারা এখন ঈশ্বরের আরাধনায় মগ্ন ৷ সপ্তাহ দুই আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেদারনাথ-বদ্রীনাথ ঘুরে এসেছেন৷ পাহাডে়র কোলে বসে ধ্যান করেছেন৷ রবিবার, ৫ নভেম্বর, ছত্তিশগড়ে গিয়ে জৈন সাধুর আশীর্বাদ নিয়েছেন৷ প্রধানমন্ত্রীর পুজো, ধ্যানের ছবি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে৷ রবিবার চারধামের অন্যতম কেদারনাথে যান কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী৷ সেখানে মন্দিরে পুজো দেন তিনি৷ পরে তাঁর মতোই দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের চা-ও পরিবেশন করেন ওয়েনাডের সাংসদ৷
সর্বোচ্চ পদাধিকারী হোন কিংবা দীন ফেরিওয়ালা -ঈশ্বরের চোখে সবাই সমান৷ সেখানে কোনও বিভেদ বা রাজনীতি নেই৷ তিনদিনের জন্য রাহুল গান্ধি কেদারনাথ সফরে গিয়েছেন৷ রবিবার সেখানে পুজো দিয়েছেন৷ এরপর দেবতার দর্শনের জন্য লাইনে দাঁড়ানো পুণ্যার্থীদের মধ্যে চা বিলি করেন কংগ্রেস সাংসদ৷ রাহুলকে কাছে পেয়ে তাঁর সঙ্গে সেলফি তোলার আবদার ধরেন অনেকেই৷ একজন বলেন, স্যার, আপনাকে টিভিতে দেখি৷ আজ সামনাসামনি দেখে খুব ভাল লাগছে৷ আমি আপনার সঙ্গে একটা সেলফি তুলতে পারি? রাহুল এই রকম অনেকের আবদার রক্ষা করেছেন৷
তবে কংগ্রেস নেতার এই সফর নিয়ে রাজনৈতিক চর্চাও কম হচ্ছে না৷ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট৷ এই সময় রাহুলের তিন দিনের জন্য তীর্থ ক্ষেত্রে চলে যাওয়া নিয়ে দলের মধ্যে অনেকেই বিস্মিত৷ যদিও রাহুলের বে দর্শন নিয়ে ভিন্ন ব্যাখ্যাও আছে৷ মিজোরাম বাদে বাকি চার রাজ্য রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং তেলেঙ্গানায় কংগ্রেস নরম হিন্দুত্বের পথ নিয়েছে৷ কংগ্রেস শাসিত দুই রাজ্য সরকার রাজস্থান ও ছত্তিশগডে় হিন্দু মন্দির সংস্কার অন্যতম কর্মসূচি৷ কংগ্রেস নেতরাও প্রচারে বিজেপির হিন্দুত্বের মোকাবিলায় মন্দির কর্মসূচি তুলে ধরছেন৷ প্রচারে রয়েছে রাহুলের মুখ৷ তাই তিনি ভোটের মুখেই মন্দির সফরে গিয়েছেন৷
কংগ্রেস নেতৃত্ব অবশ্য রাহুলের কেদারনাথ সফরকে দলের সঙ্গে মেলাতে নারাজ৷ পার্টি বলছে, এটা রাহুলের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত৷ তিনি ধার্মিক ব্যক্তি৷ দল ও ভোটের সঙ্গে রাহুলের মন্দির শিবিরের যোগ নেই বোঝাতে এক কংগ্রেস নেতা বলেন, প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি দিন কুডি় আগে স্বর্ণ মন্দিরে গিয়েছিলেন৷ সেখানেও তিনদিন কাটিয়েছেন৷ গুরুদ্বারে খাবার পরিবেশন করেছেন, থালা বাসন মেজেছেন৷
রবিবার উত্তরাখণ্ডে কেদারনাথ মন্দিরে যান৷ দেহরাদুনের জলি গ্রান্ট বিমানবন্দর থেকে সোজা তাঁর গন্তব্য ছিল কেদারনাথ৷ বিকেলে হেলিকপ্টারে চেপে কেদারনাথ হেলিপ্যাডে পৌঁছন তিনি৷ সেখানে উপস্থিত ছিলেন মন্দিরের পুরোহিত ও কংগ্রেস কর্মীরা৷ মন্দিরে পুজো দেওয়ার পর আরতিতেও অংশ নেন রাহুল৷ এরপর ভক্তদের জন্য আয়োজিত ‘চা-সেবা’তেও হাত লাগান৷ নিজের হাতে সকল ভক্তদের মধ্যে চা পরিবেশন করেন রাহুল৷
সূত্রের খবর, রাতে কেদারনাথেই ছিলেন কংগ্রেস নেতা৷ সোমবারও মন্দির চত্বরে ভক্তদের সেবায় অংশ নেবেন তিনি৷