ওয়ার্ল্ড স্লিপ ডে আসলে ঠিক কি?
ওয়ার্ল্ড স্লিপ ডে আসলে স্বাস্থ্যকর ঘুমের গুরত্ব সম্পর্কে একটি বিশ্বব্যাপী আহ্বান।
ডব্লিঊএসডি’র লক্ষ্য হল , ঘুমের সমস্যার জন্য যে সব কারণ রয়েছে সেসব ও স্বাস্থ্যকর ঘুমের গুরত্ব সবার সামনে তুলে ধরা। এই দিন্ টি সাধারণ মানুষের ঘুম সংক্রান্ত সমস্যা প্রতিরোধ ও কেন ঘুম হয়না তা নিয়ে ব্যবস্থার কথা বলে। এই পুরো উদ্যোগটি নেয় ওয়ার্ল্ড স্লিপ সোসাইটি । ওয়ার্ল্ড স্লিপ ডে আসলে আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত একটি সচেতনতা । আমাদের সুস্থ থাকার জন্য ঘুম কতটা জরুরি এটা বোঝাতে ঘুম নিয়ে যারা সর্বক্ষণ গবেষ্ণা করছেন , রোগী ও স্বাস্থ্য বিশেজ্ঞ্ররা এক্সঙ্গে হয়েছেন।
সাধারণ কিছু কথা-
বেশিরভাগ স্লিপ ডিসঅর্ডারই প্রতিরোধযোগ্য ও সেরে যায়। তবে এক তৃতীয়াংশ কম সংখ্যক মানুষের এই সমস্যার জন্য কোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হয়।
ঘুমের সমস্যা আজ বিশ্বব্যাপী মহামারির আকার নিয়েছে। যা কিনা বিশ্বের জনসংখ্যার নিরিখে মানুষের জীবনের গুণ্ মান নষ্ট করে এবং এক ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাই ঘুমের ধরণ ধারণ ও ঘুম না হওয়ার কারণ নিয়ে আরো আলোচনা ও গবেষণা করলে সমাজ থেকে এই স্লিপ ডিস্অর্ডার সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।
ভাল মানের ঘুমের উপাদান-
ঘুমের সময় সীমার বিভাজন ছাড়া একভাবে ঘুম প্রয়োজন । ঘুম গভীর হওয়া উচিত।
আলোচনার বিষয়-
গবেষণা বলছে , আমরা আমাদের জীবনের এক তৃতীয়াংশ ঘুমাতে ব্যয় করি। ঘুম একটি মৌলিক প্রয়োজন। খাওয়া এবং পান করার মত। আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ব্যায়াম এবং পুষ্টির মত জরুরি আমাদের ঘুম ও । শিশুদের মধ্যে বিপাক নিয়ন্ত্রণের জন্য অপরিহার্য। ঘুমের সময়কাল এবং শৈশব -স্থূলতার মধ্যে একটি যোগসুত্র রয়েছে।
ঘুমের সময় নিয়মিত শ্বাস নেওয়া সুস্থতা এবং স্বাস্থ্য ব্জায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের মধ্যে নিয়মিত শ্বাস নেওয়ার সমস্যা হলে তাকে স্লিপ অ্যাপ্নিয়া বলে। এটি পুরুষ এবং নারী উভ্যকেই প্রভাবিত করে। স্লিপ অ্যাপ্নিয়ার জন্য দিনের বেলায় ঘুম ঘুম ভাব থাকে । এছড়াও ক্লান্তি ও এর অন্যতম কারণ । এছাড়া হাইপার টেনশন, ইস্কিমিক হৃদরোগ , স্ট্রোক এবং ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
ঘুমের অভাব আমাদের স্বাস্থ্যের উপর উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফলে মনযোগ কমে , স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায় । বেশিদিন ধরে এটি হলে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। যেমন- স্থূলতা, ডায়াবেটিস, দুর্ব্ ল ইমিউন সিস্টেম এমনকি কিছু কিছু ক্যান্সারের ও কারণ হতে পারে।
ঘুমের অভাব বিষণ্ণতা , উদ্বেগ এবং অন্যান্য মান্ সিক অবস্থার সাথে সম্পর্কিত।ভাল স্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্যের মান নিশ্চিত করার জন্য মান ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গুরুত্ব ও পুনঃস্থাপন-ঘুম
ভাল মানের ঘুম দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য অপরিহার্য । ঘুমের গুণ্ মান জীবনের গুণ মান এবং দিনযাপনের উপর প্রভাব ফেলে।
স্লীপ ডিস্অর্ডার-
অব্স্ট্রাক্টিভ স্লীপ আপ্নিয়া :
স্বাস্থ্য এবং সুস্থতা প্রভাবিত করে। যখন ওএস এ -এর কারণে ঘুমের মধ্যে অক্সিজেনের অভাবে শ্বাস বন্ধ হয়ে যায় অখন এটি হৃদ্যের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং এর ফলে নানান সমস্যা হতে পারে।
সরাসরি বা প্রোক্ষভাবে ঘুম পারিবারিক জীবন ও সম্পর্কের উপর ও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
এর ফলে কোনও ব্যক্তির মেজাজ ও দৈনন্দিন কার্যক্রম ও প্রভাবিত হয়।
স্লিপ আপ্নিয়া এখন মহামারির আকার নিয়েছে –
৩৫% মানুষ মনে করেন না যে তাদের যথেষ্ট ঘুম হচ্ছে । যা তাদের ষারীরিক ও মানসিক উভয়কেই প্রভাবিত করে। এটি হৃদয়ের উপর চাপ সৃষ্টি করে এবং গুরুতর স্বাস্থ্যের অবনতির কয়েকটি কারণ হতে পারে।
নির্দিষ্ট ঘুমের রোগ
অনিদ্রা বা ইন্সম্নিয়া
৩৫-৪০% প্রাপ্ত বয়স্ক জনসংখ্যার মধ্যে অনিদ্রা প্রভাবিত করে।
প্রাথমিক অনিদ্রা ১-১০% প্রভাবিত করে।
অনিদ্রা মৃত্যু বা গুরুতর দুর্ঘটনা ও ঘটায়।
গবেষণায় দেখা গেছে যে অনিদ্রার জন্য মানুষ উদ্বেগ ও হতাশাগ্রস্ত বেশি হয়। অনিদ্রা একজন ব্যক্তির জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
ঘুমের মধ্যে শ্বাসের সমস্যা
অব্স্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ও এস এ) উচ্চ রক্তচাপ এবং অন্যান্য কার্ডিওভাস্কুলার রোগের জন্য একটি ঝুঁকিপুর্ণ ফ্যাক্ট্ র। শিশুদের মধ্যে এর ফলে নিউরোসাইকোলজিক্যাল ব্যাঘাত হয়।
ভাল ঘুমের জন্য প্রয়োজন
ঘুমোতে যাওয়ার আর ঘুম থেকে ওঠার সময় নির্দিষ্ট করুন।
ঘুমের ৪ঘন্টা আগে অতিরিক্ত মদ্যপান করবেন না। ধূমপান একেবারেই নয়।
ঘুমের আগে ৬ ঘন্টা ক্যাফিন এড়িয়ে চলুন। কফি , চা এবং পাশাপাশি চকলেটও।
ঘুমানোর আগে ৪ ঘন্টা ভারী , মশলা , বা মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলুন। ঘুমানোর আগে একটি হাল্কা স্ন্যাক্স খান।
নিয়মিত ব্যায়াম।
আরামদায়ক বিছানা ব্যবহার করুন।
ঘুমের জন্য একটি আরামদায়ক তাপমাত্রা বাছুন এবং ভাল বায়ু চলাচল যোগ্য ঘরে থাকুন। সব রকমের শব্দ যাতে কানে না আসে এবং যতটা সম্ভব আলো কম রাখুন।
বিছানাকে অফিস , কর্মক্ষেত্র বা বিনোদন ঘর হিসাবে ব্যবহার করবেন না।
ঘুমের সমস্যা আজকের জগতে অবহেলা করা হয়ে বলে ঘুম নিয়ে সমস্যা হতে হতে আরও বড় আকারে চলে যায়। তখন ডায়াবেটিস , উচ্চ রক্তচাপ , সেরিব্রোভাস্কুলার দুর্ঘটনা , হৃদয়ের নানা রোগের মত ডিমেনশিয়া , বিষন্নতাও ঘিরে ধরে।
নিদ্রা একটি মৌলিক প্রয়োজন।আমাদের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । গবেষণাতে দেখা গেছে , কম ঘুমের জন্য স্মৃতিশক্তি কমে যায়। একটি সুস্থ ঘুম টিস্যু টোন,স্থূলতা,ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপ এর বিরুদ্ধে রক্ষা কবচের কাজ করে। রোগ প্রতিরোধের সুরক্ষা দেয়।
নিদ্রা শুধুমাত্র শরীরের রোগ নিরাময় করে তা নয়। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের বিশ্রাম পরিমাপ করা হয়। ঘুম ভাল জীবনযাপনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বেশি বয়সে ঘুমের সমস্যা অনেকটাই বেড়ে যায়। তার ফলে বয়স্ক নাগরিকরা তাঁদের স্বাস্থ্যের ঝুঁকি বাড়িয়ে ফেলেন ঘুমের ঝামেলায়। শরীরের বিভিন্ন জৈব পরিবর্তন ও মানসিক ব্যাঘাত হয় কম ঘুমের ফলে । বাড়ায় নানান শারীরিক সমস্যা।যথা- ব্যথা, প্রস্রাব সমস্যা, বার্ধক্য বৃদ্ধিতে এবং ডিমেনষিয়া (ভুলে যাওয়া), হার্ট এবং ব্রেন স্ট্রোক। ঘুম নিয়ে বেশি দিন ধরে সমস্যা হলে বিশেজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ।