মস্কো, ২৮ ডিসেম্বর– ভারত-রাশিয়া সম্পর্ক যে মধুর তা অনেকবারই উঠে এসেছে মস্কো প্রধান পুতিনের নানা কথায়-কাজে৷ এবার আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাফল্য কামনা করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন৷ শুধু তাই নয়, বুধবার মস্কোয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকের সময় পুতিন বলেন, “বন্ধুকে খুব মিস করছি৷” মোদিকে রাশিয়ায় আসার আমন্ত্রণও জানান রুশ প্রেসিডেন্ট৷
বুধবার ক্রেমলিনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর৷ সংলাপ এবং আলোচনার মাধ্যমে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ সমাধানসূত্র বের করার কথা বলেছে ভারত৷ রাশিয়া সফররত বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে ভারতের সেই অবস্থানের কথা উল্লেখ করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও৷ শুধু তা-ই নয়, ইউক্রেন সমস্যার ‘শান্তিপূর্ণ সমাধানে’র জন্য ‘বন্ধু’ নরেন্দ্র মোদির সাহায্য চাইলেন তিনি৷ ইউক্রেনের যুদ্ধ থেকে শুরু করে ভারতে তেল আমদানি-সহ নানা বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়৷ জানা গেছে, নতুন বছরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে রাশিয়া আসার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পুতিন৷
পাঁচ দিনের রাশিয়া সফরে গেছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর৷ ক্রেমলিনে রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি৷ ভারতের বিদেশমন্ত্রীকে দেখেই হাত বাডি়য়ে স্বাগত জানান রুশ প্রেসিডেন্ট৷ পরে রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভরভের সঙ্গেও দেখা করেন জয়শঙ্কর৷
পুতিন আরও বলেন, ‘আমি বহুবার ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে তাঁকে (নরেন্দ্র মোদি)বলেছি৷ আমি জানি তিনি সবরকম চেষ্টা করতে রাজি, যাতে পরিস্থিতির সমাধান হয়৷’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ে বরাবরই নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকেছে ভারত৷ তবে আমেরিকা ও পশ্চিমের দেশগুলোর সঙ্গে সৌহার্দ্য বজায় রাখলেও রাশিয়ার পাশেই থেকেছে ভারত৷ ভূরাজনীতির সূত্র মেনে রাশিয়া ও ইরানের সঙ্গে বরাবরই উষ্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে নয়াদিল্লি৷ রাশিয়া সফররত বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠকে ভারতের সেই অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও৷ ইউক্রেন সমস্যার ‘শান্তিপূর্ণ সমাধানে’র জন্য ‘বন্ধু’ নরেন্দ্র মোদীর সাহায্যও চান তিনি৷
প্রসঙ্গত, আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে যুদ্ধের আবহেও রাশিয়া থেকে লাগাতার তেল আমদানি করে গিয়েছে ভারত৷ যুদ্ধের জেরে ২০২১ সালের পর থেকে ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক বন্ধ থাকলেও বিদেশ মন্ত্রকের মতে, ভারত এবং রাশিয়ার সম্পর্ক সময়ের সঙ্গে সঙ্গে টেকসই হয়েছে৷ পশ্চিমি বিশ্ব একঘরে করে দিলেও দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারই হয়েছে মস্কোর৷