‘গুরুতর ঘটনা, হট্টগোল না করে ঐক্যবদ্ধভাবে সমস্যার সমাধান করতে হবে’ সংসদে হামলার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া প্রধানমন্ত্রীর 

  দিল্লি, ১৭ ডিসেম্বর – ‘সংসদে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা খুবই গুরুতর৷ এই ঘটনা কোন এড়িয়ে যাওয়ার বিষয় নয়৷ তবে এ নিয়ে সংসদে হট্টগোল করে কোন লাভ নেই৷’ সংসদে স্মোক কানিস্টার হামলায় সবরকম তর্কবিতর্ক বন্ধ করা উচিত বলে মন্তব্য করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ১৩ ডিসেম্বর সংসদ হামলার ২২ বছর পূর্ণ হওয়ার দিনই ফের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় সংসদ ভবনের উভয় কক্ষেই সরকারের  গাফিলতির অভিযোগে সোচ্চার হয়েছে বিরোধী পক্ষ। সেই পরিপ্রেক্ষিতেই এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। এক হিন্দি সংবাদমাধ্যমে মোদির সাক্ষাৎকারের উল্লেখ করে এই খবর জানিয়েছে সংবাদসংস্থা পিটিআই।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মতে বিষয়টি খুবই গুরুতর। বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি না করে সমস্যার সমাধানের উপর জোর দেওয়া উচিত বলে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলির কাছে আর্জি জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এই ঘটনার তদন্ত করছে। সেদিনের ঘটনায় যাঁরা জড়িত তাঁদের আসল উদ্দেশ্য কী ছিল তা গভীরে গিয়ে তদন্ত করা উচিত বলে ওই সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সকলের এই ঘটনার গুরুত্ব বোঝা উচিত। ঘটনার গভীরে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি সমাধান খুঁজে বের করা উচিত যাতে বিষয়টির পুনরাবৃত্তি না হয়। ঘটনার লোকসভার অধ্যক্ষ  তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদের সকলের বিশ্বাস খুব শীঘ্রই ষড়যন্ত্র ফাঁস হবে।’ মোদির বিরোধীদের উদ্দেশ্যে বার্তা, ‘সবার উচিত এই ধরণের ঘটনায় তর্কবিতর্ক থেকে দূরে থাকা।’ 
সংসদে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গাফিলতি নিয়ে বিরোধী দলগুলি ক্রমাগত আক্রমণ করে চলেছে সরকারকে। গত দুই দিন ধরে সংসদের কাজকর্ম বিঘ্নিত হচ্ছে। তাঁদের দাবি, ‘প্রথমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে এই বিষয়ে উভয় কক্ষে বিবৃতি দিতে হবে। তারপর সংসদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা করা উচিত।’
উল্লেখ্য, ১৩ ডিসেম্বর সংসদে ঢুকে পড়েন দু’জন। ভিজিটরস গ্যালারি থেকে লাফ দিয়ে সোজা লোকসভায় পৌঁছে যান। সাংসদদের বসার আসনের উপর দিয়ে দৌড়োতে শুরু করেন ওই দুজন। এরপর জুতোর মধ্যে লুকিয়ে রাখা স্মোক ক্যান ছোঁড়েন। হলুদ গ্যাসে ঢেকে যায় সংসদ কক্ষ।  সংসদে ভিতরে যখন এসব কাণ্ড ঘটে ঠিক তখনই সংসদের বাইরে তাঁদের সঙ্গীরা বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন।  পুলিশ দু’জনকে দ্রুত হেফাজতে নেয়। অন্যদিকে, সংসদের কার্যক্রমে বাধা দেওয়ার জন্য ১৪ জন সাংসদকে গোটা অধিবেশন থেকে বরখাস্ত করা হয়। 
সংসদ হামলার মূলচক্রী ললিত ঝা গ্রেপ্তার হয়েছেন। আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে সংসদে উপস্থিত চার অভিযুক্ত-সহ পাঁচজনকে। এরপরই নিরাপত্তার ইস্যুতে বিরোধীদের তরফে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করা হয়। সাংসদদের একাংশ অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেন।  কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বলা হয় সংসদ ভবনের ভিতরে নিরাপত্তার বিষয়টি লোকসভার সচিবালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন।  এছাড়াও সরকারের তরফে বলা হয়, সংসদ ভবনে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনা আগেও ঘটেছে। তবে ১৩ ডিসেম্বরই ফের হামলার ঘটনা ঘটায় সংসদ ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।