বৃহস্পতিবার সকালে হাইকোর্টে মামলার শুনানির শুরু থেকেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এর আগে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার জন্য। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য ছিল, তারা এখনও পরিস্থিতির মূল্যায়ন করেনি। স্পর্শকাতর এলাকাও চিহ্নিত করা হয় নি। সে কথা শুনে ক্ষুব্ধ হন প্রধান বিচারপতি। বিচারপতি বলেন, ‘তাহলে কি গোটা রাজ্যকে স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দেব? সেটা ভাল হবে?’
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে অশান্ত হয়ে ওঠে রাজ্য, রক্তাক্ত হয় বিভিন্ন জেলা। মনোনয়নের শেষ দিনেও হিংসার ঘটনায় মৃত্যু হয় তিনজনের। মনোনয়নকে ঘিরে এই নজিরবিহীন হিংসার ঘটনাবলি দেখে এদিন শুনানি পর্বেই রাজ্য এবং নির্বাচন কমিশনকে তিরস্কার করে আদালত। রাজ্যজুড়ে পঞ্চায়েত ভোটকে ঘিরে যে ধরণের হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে চলেছে তাতে ক্ষুব্ধ কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এদিন তিরস্কারের সুরে বলেন, ‘‘স্পর্শকাতর বুথ নিয়ে যদি কমিশন সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে, তবে আদালত গোটা রাজ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেবে।’’ আদালত আরও বলে, ‘‘পঞ্চায়েত মামলা নিয়ে রায় কার্যকর না হলে আদালতও নীরব দর্শক হয়ে থাকবে না ।’’
আদালতকে রাজ্য জানায়, পুলিশের ব্যবস্থা করার জন্য সবরকম পদক্ষেপ করা হচ্ছে। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, বিহার, পঞ্জাব এবং তামিলনাড়ুর কাছে পুলিশ চাওয়া হয়েছে। তামিলনাড়ুর মুখ্যসচিবও আশ্বাস দিয়েছেন। বাইরের রাজ্য থেকে পুলিশ আসছে।
তারপর বিকেলেও দীর্ঘক্ষণ মামলার শুনানি হয়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উপর আর আস্থা রাখতে পারেনি আদালত। আদালত বলে, নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ফেলে রাখার জন্য নয়। আদালত জানায় , আগে আদালত যা যা নির্দেশ দিয়েছিল , তাকে মান্যতা দিয়ে কোনও রকম প্রশংসনীয় পদক্ষেপ করেনি রাজ্য কমিশন। শেষ পর্যন্ত সন্ধেয় মামলার রায় জানিয়ে দিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।