ভাঙড়, ১৩ জুন – মনোনয়ন জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ ভাঙড়। যথেচ্ছ বোমাবাজি, গুলি, ঝরল রক্ত। বিডিও অফিসের কাছে বোমাবৃষ্টি, বিডিও অফিসের সামনে চলে ৭ রাউন্ড গুলি। পুলিশের সামনেই চলে তাণ্ডব। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটায় পুলিশ। বোমাবাজি, ভাঙ কাচের বোতল-ইটবৃষ্টির আঘাতে আহত হন পুলিশ কর্মীরাই। এরপর চলে ব্যাপক ধরপাকড়।মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে বিডিও অফিসের কাছেই গুলিবিদ্ধ হন এক আইএসএফ প্রার্থী। আইএসএফের অভিযোগ , হাতে লাঠি, ঢাল হাতে সটান পুলিশ ঢুকে পড়ে বিডিও অফিসের ভিতর। মনোনয়ন জমা দিতে আসা আইএসএফ কর্মীদের টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তোলা হয়।
ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট বা আইএসএফ-এর প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে ঘিরে মঙ্গলবার রণক্ষেত্র হয়ে ভাঙড়। মঙ্গলবার সকালে ১৪৪ ধারা চলা সত্ত্বেও ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসের সামনে মেলার মাঠে সংঘর্ষ বাধে আইএসএফ এবং তৃণমূলের মধ্যে। সংঘর্ষে বোমাবৃষ্টি এবং গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করা হয়, লাঠিচার্জও করে পুলিশ। পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করেও ইটবৃষ্টি এবং বোমাবাজি হয় বলে অভিযোগ। প্রথমে পুলিশ পিছু হটলেও পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মঙ্গলবার এই হামলা, অশান্তির ঘটনায় অভিযোগ একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তোলে। আইএসএফের অভিযোগ, সোমবার আইএসএফ কর্মীরা ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাওয়ার সময় বাধা দেয় তৃণমূল। যদিও তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই সময় ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিজয়গঞ্জ বাজারে আইএসএফ এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে , যার জেরে সেখানকার পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। দু’পক্ষের মধ্যে যথেচ্ছভাবে বোমাবাজি এবং গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে। একের পর এক বোমা পড়তে থাকে। জানা গেছে, সাত রাউন্ড গুলিও চলে।
তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লার অভিযোগ, মঙ্গলবার তৃণমূলের ‘নবজোয়ার যাত্রা’ কর্মসূচি বাতিল করতেই সমাজবিরোধীদের পরিকল্পিত ভাবে হামলা করেছে আইএসএফ। এজন্য ভাঙড়ের আইসএফ বিধায়ক নৌসাদ সিদ্দিকীকেই দায়ী করেছেন তিনি।
ভাঙড়ের ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নিতে জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এই পরিস্থিতির জেরে মঙ্গলবার সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায় ভাঙড় ২ নম্বর বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া। অফিসের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
সোমবার রাতে ভাঙড়ের চালতাবেড়িয়া এলাকায় কুতুবউদ্দিন আলি মোল্লা নামে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে আইএসএফের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সোমবার ভাঙড় ২ বিডিও অফিসে তৃণমূলের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় যান কুতুবউদ্দিন। সেই সময় তাঁর বাড়িতে ইট, বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। যদিও আইএসএফ সেই অভিযোগ অস্বীকার করে।
মঙ্গলবার আরাবুল এবং তাঁর ছেলে হাকিমুল ছাড়াও কয়েকজন তৃণমূল নেতা ও কর্মীর গাড়িতে ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে আইএসএফ বোমাও ছোড়ে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। দফায় দফায় গুলি, বোমার আঘাতে পুলিশের এক এসআই আহত হন।