দিল্লি, ৪ সেপ্টেম্বর– এমনিতে জনপ্রিয়তার নিরিখে তার ধারে-কাছে ঠেকতে পারেনা বিশ্বের তাবড়-তাবড় নেতারা। এবার কাজের নিরিখেও তিনি প্রায় নম্বর ওয়ানই। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে জিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তিনি নাকি একটি দিনের জন্যও কাজ বন্ধ রাখেননি। এটা আমরা বলছি না বলছে সরকারি নথি। একটি আরটিআই-এর উত্তরে জানা গেছে, গত ৯ বছরে একদিনের জন্যও ছুটি নেননি প্রধানমন্ত্রী । যে কাজপাগল , তা প্রায় সকলেই জানেন। স্থানীয় হোক, বা জাতীয় ছুটি, কিংবা রবিবার, স্কুল-কলেজ-অফিস-আদালত সব বন্ধ থাকলেও নরেন্দ্র মোদিকে বিশ্রাম নিতে দেখা যায়নি কখনও।
প্রফুল পি সারদা নামে এক ব্যক্তি তথ্যের অধিকার আইনে দুটি প্রশ্ন জানতে চেয়েছিলেন। প্রথমটি হল, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে কত দিন মোদি অফিসে উপস্থিত ছিলেন। তার জবাবে সরকার জানিয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রী সর্বক্ষণ তাঁর দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে কোনও ছুটি পাননি।’
দ্বিতীয় প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত কত দিন বিভিন্ন ইভেন্ট ও অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন এবং উপস্থিত ছিলেন, তার ব্যাপারে বিশদে জানতে চাওয়া হয়েছে। এর উত্তরে পিএমওর একটি ওয়েবসাইট লিঙ্ক দেওয়া হয়েছে। যাতে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন তেমন ইভেন্টের সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যা প্রায় প্রতিদিন একটি করে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সামিল।
তবে বিষয়টি সামনে আসার পর প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘এই সব প্রশ্ন হয়তো নিজেদের লোককে দিয়েই করায় বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীরা কেউই ছুটি নেন না। তাঁরা যখন যেখানে থাকেন সেটাই তাঁদের দফতর। এমন নয়, প্রধানমন্ত্রী তাঁর সচিবালয়ে গেলে তবেই তিনি অফিসে গিয়েছেন ধরা হবে। তাঁর সরকারি বাসভবনও তাঁর দফতর। মুখ্যমন্ত্রীদের ক্ষেত্রেও তাই। সুতরাং এ ধরনের তথ্য গিমিক ছাড়া কিছু নয়।’
প্রধানমন্ত্রী কীভাবে কাজ করেন, সম্প্রতি বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর তা নিয়ে আলোকপাত করেছিলেন। ব্যাংককে ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে একটি আলাপচারিতার সময় জয়শঙ্কর বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি যে এই সময়ে প্রধানমন্ত্রী মোদির মতো একজনকে পাওয়া দেশের জন্য একটি বিশাল সৌভাগ্যের বিষয়। এবং আমি এটা বলছি না কারণ তিনি এখনকার প্রধানমন্ত্রী এবং আমি তার মন্ত্রিসভার সদস্য।’
গত বছর, মহারাষ্ট্র বিজেপির প্রধান চন্দ্রকান্ত পাটিল দাবি করেছিলেন যে প্রধানমন্ত্রী মোদি দিনে মাত্র ২ ঘণ্টা ঘুমান। যদিও তা সঠিক কিনা জানা যায়নি।