দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সাংবিধানিক বিধান স্মরণ করাল সুপ্রিম কোর্ট

দিল্লি, ২৬ অক্টোবর– নাগরিক অধিকার নিয়ে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সাংবিধানিক বিধান স্মরণ করাল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। মণিপুরের একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি বলেছেন, কোনও অবস্থাতেই আইনের শাসন বলবৎ করার নামে নাগরিকের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও অধিকার হরণ করতে পারে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

এই ব্যাপারে সংবিধানের ২২ (৫) নম্বর অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে সর্বোচ্চ আদালত বলেছে, আইন কার্যকর করার সময়ে প্রশাসনকে ওই অনুচ্ছেদে উল্লিখিত অধিকারের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সংবিধানের ওই অনুচ্ছেদে নাগরিকের দুটি অধিকারের উল্লেখ করা হয়েছে। একটি হল, পুলিশ-সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কাউকে আটক করলে সঙ্গে সঙ্গে সেই ব্যক্তিকে আটকের কারণ জানাতে হবে। দুই, আটক সংক্রান্ত নথিপত্রও সরবরাহ করতে হবে তৎক্ষণাৎ। যাতে সংশ্লিষ্ট নাগরিক আটকের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করতে পারেন। মণিপুরের মামলাটিতে আটক ব্যক্তিকে নথিপত্র সরবরাহে টালবাহানা করার অভিযোগ করা হয়েছিল।

সম্প্রতি বিচারপতি অজয় রাস্তোগি এবং সিটি রবিকুমারের বেঞ্চ সেই মামলায় বলেছে, ব্যক্তি স্বাধীনতা সবচেয়ে লালিত এবং সাময়িকভাবেও তা কেড়ে নেওয়া যায় না। কোনও অপরাধীকে আটক করলেও তাকে নথিপত্র-সহ আটকের কারণ জানানো জরুরি। যদিও বেঞ্চ একই সঙ্গে বলেছে, সংবিধানের ২২ (৫) অনুচ্ছেদ পালন বা লঙ্ঘন করা হয়েছে কি না তা নিধারণ করা মামলা বিশেষে ভিন্ন হওয়া স্বাভাবিক। ব্যক্তি স্বাধীনতা, অধিকারের সর্বাঙ্গীন প্রয়োগ অনেক সময়ই পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।

সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি করা হয়েছিল মণিপুরের একটি মাদক মামলায় রাজ্য হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় মাদক আইনে এক ব্যক্তিকে আটকের সময় প্রয়োজনীয় নথিপত্র সরবরাহ করা হয়নি বলে অভিযোগ করা হয়। মামলাকারী হাইকোর্টের কাছেও এই ব্যাপারে সুবিচার পাননি বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ নিম্ন আদালত এবং পুলিশের ভূমিকায় বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছে, আমরা অবাক হচ্ছি যে, কেন আটক করা হয়েছে, এই প্রশ্নটির জবাব মামলাকারীকে দেওয়া হয়নি।