বিফলে ‘শান্তি’ চেষ্টা, মণিপুরে ফের হিংসায় নিহত ৯, আহত বহু

ইমফল, ১৪ জুন– অশান্তির আগুনের ওপর দাঁড়িয়ে মণিপুর। শান্তি ফেরানোর সব চেষ্টা বিফলে গেল ফের বড় ধরনের হিংসার ঘটনায়। পূর্ব ইম্ফলে ফের জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছে নয় জনের। গুরুতর আহত ১০জন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মঙ্গলবার বেশি রাতে সশস্ত্র এক দল পূর্ব ইম্ফল জেলার একটি গ্রামে হামলা চালায়। এলোপাথাড়ি গুলি চলে। তাতে ঘটনাস্থলেই নয় জনের মৃত্যু হয়। গুলিবিদ্ধ ১০জনকে ইম্ফলের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে মৈতেই সম্প্রদায়ের ওই গ্রামে হামলা চালান হয় পরিকল্পনা করে। নিহত ও আহতরাও ওই সম্প্রদায়ের মানুষ। যার ফলে মনে করা হচ্ছে হামলার পেছনে আছে কুকি জনগোষ্ঠী।

উল্লেখ্য ৩ মে থেকে মণিপুরে হিংসার ঘটনা শুরু।  মঙ্গলবার রাতের হত্যাকাণ্ডটি ধরে গত গত এক মাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১১৫। গত পরশু পূর্ব ইম্ফলেই একটি গ্রামে গুলি করে হত্যা করা হয় কুকি জনগোষ্ঠীর এক ছাত্রকে। মঙ্গলবারের ঘটনায় অসম রাইফেল্সের জওয়ানদের সঙ্গে হামলাকারীদের জোর সংঘর্ষ হয়। জঙ্গলের মধ্য থেকে গুলি ছুঁড়তে থাকা জঙ্গিদের কেউ জওয়ানের গুলিতে আহত বা নিহত হয়েছে কি না জানা যায়নি। তবে আচমকা আক্রমণে তারা নয় জনের প্রাণ কেড়ে নেয়।

মনিপুরে শান্তি রক্ষায় রাজ্যপাল অনশূয়া উইকির নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকার যে শান্তি কমিটি গঠন করেছিল কুকি ও মৈতেই, দুই সম্প্রদায়ই তা বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিবদমান দুই গোষ্ঠীই দাবি করেছে আগে প্রতিপক্ষকে অস্ত্রমুক্ত করতে হবে আগে। তবে শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে রাজ্যপাল সবচেয়ে কুকির সংখ্যাগরিষ্ঠ অশান্ত চূড়াইচাঁদপুরে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। কুকিদের একাধিক সংগঠন রাজ্যপালকে দেওয়া স্মারকলিপিতে বলেছে, মৈতেইরা ২৫৩টি চার্চ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। অবিলম্বে সেগুলির সংস্কার করতে হবে সরকারকে। রাজ্যপাল ইম্ফলে ফিরে আসার পর পরই মত বদলে যায় সংঘর্ষে লিপ্ত দুই গোষ্ঠীর। তাদের বক্তব্য, হামলা না থামা পর্যন্ত শান্তি বৈঠক অর্থহীন।


বর্তমান অশান্তির ঘটনায় কেন্দ্রের সব চেষ্টাই বিফলে গেল। এরপর স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে এরপর কী হবে ? জঙ্গি দমন অভিযানের পাশাপাশি সিবিআই তদন্ত শুরু হয়েছে। কিন্তু হিংসা না থামায় তদন্তও ঠিকঠাক করা যাচ্ছে না। প্রশাসনের একাংশের আশঙ্কা, এরপর দুই গোষ্ঠী বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটিকেও বয়কট করতে পারে।