২৩ বছরের চেষ্টায় অঙ্কে পাশ, বিয়ের যৌতুকে সরকারের কাছে বাডি় চাইলেন ৫৬-র প্রৌঢ়

ভোপাল, ১ ডিসেম্বর–  সবে ভোটের তাপদাহ কমেছে৷ কিন্তু ভোটের তাপ কমতেই ফের উত্তপ্ত মধ্য প্রদেশ৷ এক ৫৬-র প্রৌঢ় সারা ফেলে দিয়েছেন জব্বলপুর শহরে৷ আসলে তিনি ৫৬ বছর বয়সে বিয়ে করার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন৷ ভাবছেন এ আর কি? এই ৫৬ তেই তো সব৷ আসলে প্রৌঢ় এই বয়সে এসে ২৩ বারের চেষ্টার পর অঙ্কে পাশ করেছেন৷ এবং তারপর বিয়ের ইচ্ছা হয়েছে তাঁর৷ আর তাই তার অসাধ্য সাধনের পুরস্কার স্বরূপ সরকারের কাছে যৌতুক হিসেবে একটি বাডি় চেয়েছেন৷ সরকার যদি তাঁকে বাডি় তৈরি করতে সাহায্য করে, তাহলে এই বয়সেও তিনি বিয়ে করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছেন৷
আসলে ২৩ বার ব্যর্থ হওয়ার পর, অবশেষে এই বয়সে এসে তিনি এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেছেন৷ এখন বিয়ের কতা ভাবছেন৷ তবে, তার জন্য আগে মাথা গোঁজার একটা জায়গা চাই৷ সেটা পেলেই, এমনকি দশম শ্রেণি পাস করা কোনও মেয়েকেও বিয়ে করতে প্রস্তুত তিনি৷ তবে, সেই মেয়ের গানে আগ্রহ থাকা চাই৷ এই মজার কাহিনি, জব্বলপুরের বাসিন্দা রাজকরণ বড়ুয়ার৷ প্রথমে তিনি গণিত নিয়ে গ্র্যাজুয়েশন করেছিলেন৷১৯৯৬ সালে, একটি স্কুলে অস্থায়ী শিক্ষক হিসাবে কাজ পেয়েছিলেন৷ সেখানে তিনি গণিত পড়াতেন৷ তাঁর শিক্ষাদানের পদ্ধতি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছিল৷ তাই তিনি ভেবেছিলেন, গণিতে যদি এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করতে পারেন, তাহলে তিনি স্থায়ীভাবে গণিতের শিক্ষকের চাকরি পাবেন৷ এরপর, তিনি রানী দুর্গাবতী বিশ্ববিদ্যালয়ে গণিতকে মূল বিষয় হিসেবে নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন৷ ১৯৯৭ সালে প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় বসেছিলেন৷ কিন্ত্ত, তিনি সেই পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি৷ কিন্ত্ত, তাই বলে চেষ্টা ছাডে়ননি৷ সুকুমার রায়ের গঙ্গারাম ১৯ বার ম্যাট্রিকে ঘায়েল হয়ে থেমে গিয়েছিলেন৷ কিন্ত্ত, রাজকরণ বড়ুয়া এমএসসি পরীক্ষায় ২৩বার ব্যর্থ হয়েও, আশা ছাডে়ননি৷
করোনাভাইরাস মহামারির সময়, ২০২০ সালে পরীক্ষা নেওয়া যায়নি৷ সেই বছর পরীক্ষা ছাড়াই সব ছাত্রছাত্রীকে পাশ করিয়ে দেওয়া হয়েছিল৷ রাজকরণ এই সিদ্ধান্তের সুফল পেয়েছিলেন৷ ২০২১-এ একইভাবে এমএসসি দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হন এবং এমএসসি ডিগ্রি অর্জন করেন৷ এখন তাঁর বিয়ে করে থিতু হওয়ার ইচ্ছা হয়েছে৷ জীবনের ৫৬টি বসন্ত পেরিয়ে গিয়েছে৷ কিন্ত্ত, সেটা সমস্যা নয়৷ বিয়ের পথে রাজকরণের প্রধান বাধা হল, থাকার জায়গা৷ তাঁর নিজের কোনও বাডি় নেই৷ নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করেন৷ যখন যে বাডি়তে কাজ নেন, তখন সেই বাডি়তেই থাকেন তিনি৷
মধ্য প্রদেশে এরপর কারা সরকার গঠন করবে, জানা যাবে ৩ ডিসেম্বর৷ সরকারে যারাই আসুক, রাজকরণের ইচ্ছেপূরণ কি করবে তারা? সেটাই এখন দেখার৷