পঞ্চায়েত ভোট অবাধ ও শন্তিপূর্ণ করতে হবে , রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট 

কলকাতা , ১৩ জুন – পঞ্চায়েত ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়ার নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বিশেষ করে রাজ্যের ৭ টি স্পর্শকাতর জেলায় অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ভয়মুক্ত পরিবেশে ভোট করানোর জন্য কমিশনের কেন্দ্রীয়বাহিনীর সাহায্য নেওয়া প্রয়োজন। পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তা নিয়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিলেও, মনোনয়নের সময়সীমা নিয়ে কোনওরকম হস্তক্ষেপ করেনি হাই কোর্ট। মনোনয়নের সময়সীমা বাড়ানো হবে কি না, তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।
শুধু রাজ্য পুলিশ নয়, পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। বিশেষ করে স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।  বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, পূর্ব মেদিনীপুর, জলপাইগুড়ি, হুগলী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা , উত্তর ২৪ পরগনার একাংশকে স্পর্শকাতর এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন।
কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়েছে, ভোট সংক্রান্ত সামগ্রিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকেই। আদালত জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত আইনের উপর নির্ভর করেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এছাড়াও আইন অনুযায়ী রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে পর্যবেক্ষক নিযুক্ত করতে হবে।
কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, পঞ্চায়েত ভোটে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে প্রত্যেক বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে। যে সব বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো সম্ভব নয়, সেখানে ভিডিয়োগ্রাফির বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। মামলকারীদের তরফে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির পর্যবেক্ষণে ভোটের দাবি জানানো হয়। কিন্তু সেই দাবি খারিজ করে দেয় আদালত ।
আদালতের নির্দেশ, তিনস্তরের পঞ্চায়েতের ভোট গণনা একই সঙ্গে করতে হবে। আদালত আরও জানায় বিশেষ প্রয়োজন না হলে পঞ্চায়েত ভোটে কোনও চুক্তিভিত্তিক কর্মীকে কাজে লাগানো যাবে না। ভোটের কাজে থাকা সরকারি কর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্বও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বলে জানিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। সিভিক ভলান্টিয়ারদেরও হাইকোর্টের বেধে দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী ব্যবহার করা যাবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। 
তবে মনোনয়নের সময়সীমা নিয়ে আদালত কোনও মতামত দেবে না। আদালত জানায় কমিশন স্বতন্ত্র স্বাধীন সংস্থা। তাই মনোনয়ন নিয়ে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেবে কমিশনই। প্রসঙ্গত, আদালতে মনোনয়নের সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছিলেন বিরোধীরা। কিন্তু আদালতের পর্যবেক্ষণের পর বহাল থাকছে কমিশনের ৯ জুনের বিজ্ঞপ্তিই। অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর আর্জিও জানানো হয়েছিল। সে ব্যাপারেও আদালতের নির্দেশ, সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।