গাজা, ১১ নভেম্বর – ইজরায়েলি সেনার হামলায় প্যালেস্টাইনের নিহত নাগরিকের সংখ্যা ১১ হাজার ছাড়িয়ে গেল৷ গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার জবাব দিতে ইজরায়েলের ধারাবাহিক আক্রমণ শুরু হয় গাজায়৷ স্বশাসিত প্যালেস্টাইনি কর্তৃপক্ষের স্বাস্থ্য দফতরের তরফে শুক্রবার বিকেলে জানানো হয়েছে গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার ‘জবাবে’ তেল আভিভের ধারাবাহিক আক্রমণ শুরু হয়েছিল গাজ়ায়৷ শুক্রবারও তা জারি থেকেছে৷
শুক্রবার উত্তর গাজ়ার আল-শিফা হাসপাতালে আঘাত হানে ইজ়রায়েল৷ ইজরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে সেখানে চিকিৎসাধীন বেশ কিছু প্যালেস্টাইনি নাগরিকের মৃতু্য হয়েছে বলে অভিযোগ৷ গাজার আল-রানতিসি শিশু হাসপাতালেও ইজরায়েলি সেনার ট্যাঙ্কের গোলাবর্ষণ হয়৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা -র তরফে শুক্রবার জানানো হয়েছে ইজ়রায়েলি সেনার হামলার কারণে গাজার ২০ টি হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা কোথাও সম্পূর্ণভাবে বা আংশিক ভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছে৷
‘হু’-র মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস শুক্রবার বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি আল-শিফা হাসপাতালে বোমা হামলা চালানো হয়েছে৷’’ গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরেই গাজায় বিদু্যৎ সরবরাহ ছিন্ন করে দেয় ইজরায়েলি সেনা৷ সেই পরিস্থিতিতে জেনারেটরের সাহায্যে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা চালানো হচ্ছিল৷ কিন্ত্ত সঞ্চিত ডিজেল শেষ হতে বসায় বেশ কয়েকটি হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে গাজায়৷ ওষুধ-সহ অত্যাবশকীয় চিকিৎসা সরঞ্জামের সরবরাহও কার্যত বন্ধ৷ এই পরিস্থিতিতে বহু রোগীর মৃতু্যর আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
এদিকে হামাস-ইজরায়েল সংঘর্ষ শুরুর পর গত ৩৫ দিনে বার বার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নাকচ করেছে ইজরায়েলি সরকার৷ এবার গাজাবাসীর স্বার্থে কিছুটা সুর নরম করেছে ইজরায়েল৷ উত্তর গাজায় রোজ ঘণ্টা চারেকের জন্য অভিযান বন্ধ রাখতে রাজি হয়েছে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স৷ ওই সময়ের মধ্যে গাজাবাসীরা ‘মানবাধিকার করিডর’ দিয়ে পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে যেমন যেতে পারবেন, তেমনই বন্দিদের মুক্তির জন্যও ওই সময়টুকু ব্যবহার করা যাবে৷
ইজরায়েলের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি৷ এবিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘ইজরায়েল সেনার এই সিদ্ধান্ত প্রথম হলেও তাৎপর্যপূর্ণ৷’’ তবে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, চার ঘণ্টার এই সময়সীমাকে যুদ্ধবিরতি ভাবলে ভুল হবে৷ হামাসের বিরুদ্ধে ইজরায়েলের লড়াইয়ে কোনও ছেদ পড়বে না৷ চার ঘণ্টার ওই সময়টুকু শুধুই গাজার নিরীহ, অসামরিক সাধারণ মানুষের জন্য৷ তা-ও আবার একটি নির্দিষ্ট জায়গায় এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে৷
এই নিয়ে নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, ‘‘হামাস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই যেমন চলছে, চলবে৷ কিন্ত্ত যুদ্ধক্ষেত্র থেকে যাতে নিরাপদ আশ্রয়ে, গাজার বাসিন্দারা চলে যেতে পারেন, তাই শুধুমাত্র তাঁদের কথা ভেবে কিছুটা সময় দেওয়া হয়েছে৷’