দেশ বাঁচাতে করাচি বন্দর আরবের হাতে তুলে দিতে পারে পাকিস্তান

karachi airport

ইসলামাবাদ, ২১ জুন– চিনের পর আরব আমিরশাহি! অর্থসঙ্কটের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে আবার একটি দেশের দ্বারস্থ হল পাকিস্তান। সম্প্রতি চিনের কাছ থেকে সরাসরি একশো কোটি ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৮১৯২ কোটি) অর্থসাহায্য নিয়েছে পাক সরকার। তবে আরবের ক্ষেত্রে তেমনটা নয়। করাচি বন্দর আরবের হাতে তুলে দিতে পারে পাকিস্তান! আর তার বিনিময়ে নিতে পারে মোটা অর্থ। পাকিস্তানের এক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনটাই। ইতিমধ্যেই সে দেশের সরকার চুক্তি চূড়ান্ত করার জন্য একটি আলোচনা কমিটি গঠন করেছে বলেও রিপোর্টে উঠে এসেছে। দেশের অর্থভান্ডার চাঙ্গা করতেই নাকি এমন সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে পাক সরকার।

সোমবার পাকিস্তানে বাণিজ্যিক লেনদেন সংক্রান্ত মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী ইশহাক দার। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ‘এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈঠকে করাচি পোর্ট ট্রাস্ট (কেপিটি) এবং আরব সরকারের মধ্যে একটি বাণিজ্যিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

ব্যবসায় আরও উন্নতির জন্য এর আগে করাচি বন্দর অধিগ্রহণে আগ্রহ দেখিয়েছিল আরব সরকার। তখন আমল না দিলেও বর্তমানে সেই প্রস্তাবকেই নাকি এক প্রকার লুফে নিয়েছে পাক সরকার।


প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরেই অর্থকষ্টে ভুগছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান। পাকিস্তানের ভান্ডারে বিদেশি মুদ্রার পরিমাণ ক্রমশ কমছে। এক প্রকার ধুঁকছে সে দেশের অর্থনীতি। পাশাপাশি, পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে পাকিস্তানে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম। দু’বেলার খাবার জোটাতে হিমশিম খাচ্ছেন পাক নাগরিকরা। সেই অবস্থা ফেরাতে চিনের কাছে ‘হাত পেতেছিল’ পাকিস্তান। এ বার আরবেরও দ্বারস্থ হল অর্থনৈতিক সঙ্কটে পড়া এই দেশ।

কোন দেশের কাছে কত পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা রয়েছে, তা দেখে বোঝা যায়, সে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন। একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ পাকিস্তানের কাছে বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ার তলানিতে ঠেকেছে। ঋণের পরিমাণ হু হু করে বাড়ছে। যার জেরে সে দেশে আর্থিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে অনেক দিন ধরেই আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)-এর দিকে তাকিয়ে রয়েছে পাকিস্তান। তবে আইএমএফ-এর হাত গলে সে টাকা এখনও পাকিস্তানে পৌঁছয়নি। পাকিস্তানের সম্প্রতি পেশ করা বাজেট নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল আইএমএফ। পাশাপাশি, পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনেক দেশই অর্থসাহায্য করতে এগিয়ে আসছে না।

এই সঙ্কট থেকে দেশকে বাঁচাতে সম্প্রতি একটি নতুন পদক্ষেপও করেছে শাহবাজ শরিফের সরকার। ৩ দেশের সঙ্গে বিনিময় বাণিজ্যে রাজি হয়েছে ইসলামাবাদ। সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাশিয়া, ইরান এবং আফগানিস্তান— এই ৩ দেশের সঙ্গে বিনিময় বাণিজ্য করবে পাকিস্তান। অর্থাৎ, পণ্যের বিনিময়ে পণ্য নীতিতে এখন থেকে বাণিজ্য চলবে। যেমনটা হত মুদ্রা আবিষ্কারের আগে।