জম্মু, ২৭ অক্টোবর – সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে জম্মু-কাশ্মীরের আর্নিয়া সেক্টর ও আন্তর্জাতিক সীমানায় ফের হামলা চালাল পাকিস্তানের বাহিনী। সেনা সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার রাতে আন্তর্জাতিক সীমানা বরাবর পাঁচটি ভারতীয় সেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় পাক সেনা। রাতভর নিয়ন্ত্রণরেখায় গোলাবর্ষণ করে। পাকিস্তানের এই হামলায় ভারতের দুই বিএসএফ জওয়ান জখম হন। তাছাড়া সংলগ্ন এলাকায় কয়েকজন সাধারণ বাসিন্দাও আহত হন বলে খবর পাওয়া গেছে।
জম্মুর আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফের একাধিক ছাউনির ওপর ফের হামলা চালাল পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার রাত থেকে টানা গুলিগোলায় দু’জন বিএসএফ জওয়ান গুরুতর জখম হয়েছেন। বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে, অর্নিয়া-সুচেতগড় সেক্টরে পাঁচটি সীমান্ত চৌকিতে বৃহস্পতিবার রাত ৮ টা নাগাদ বিনা প্ররোচনায় পাক বাহিনী হামলা চালায়। পাকিস্তান রেঞ্জার্স বাহিনীর পাশাপাশি পাক জঙ্গিরাও হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে বিএসএফের একটি সূত্রের খবর। পাল্টা জবাব দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনীও। রাতভর দুই পক্ষের গোলাগুলি চলে। জখম হন দুই জওয়ান। তাঁদের সেনা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গুলির লড়াইয়ে কয়েকজন গ্রামবাসীও জখম হন। তবে তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানা গেছে।
সেনা সূত্রে খবর, গত কয়েকদিন ধরেই নিয়ন্ত্রণরেখার আশপাশে পাক সেনার সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। নিয়ন্ত্রণরেখায় জঙ্গি অনুপ্রবেশের চেষ্টাও হয়। পাঁচ লস্কর জঙ্গিকে নিকেশও করেছে ভারতীয় বাহিনী। শুধু সেনা ঘাঁটিকে লক্ষ্য করেই নয়, সীমান্তবর্তী এলাকা লক্ষ্য করেও পাকিস্তান সেনা মর্টার হামলা চালিয়েছে বলে সেনা সূত্রে খবর। আর্নিয়া, সুচেতগড়, সিয়া, জাবোয়াল এবং ত্রেভা এলাকায় একাধারে গোলাগুলি চলে। হামলায় জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি থেকে লোকজন ভয়ে পালাতে শুরু করে। রাতেই বহু মানুষ ঘর ছেড়ে পালিয়ে যান।
সেপ্টেম্বর মাসেও জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা এবং আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফের চৌকিগুলির উপর হামলা চালিয়েছিল পাক বাহিনী। জম্মু, সাম্বা ও পুঞ্চ জেলায় ওই ধারাবাহিক হামলায় কয়েক জন বিএসএফ জওয়ান আহত হয়েছিলেন।
ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছে, গত ১০ দিনের মধ্যে, এই নিয়ে আন্তর্জাতিক সীমান্ত এলাকায় দ্বিতীয়বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করল পাকিস্তান। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই পাক সেনা নিরীহ গ্রামবাসীদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। পাকিস্তানকেও যোগ্য জবাব দিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সন্ত্রাস বন্ধ করতে বহুবার সতর্ক করা হয়েছে পাকিস্তানকে। পাকিস্তানকে সতর্ক করার পরেও তারা কর্ণপাত করেনি। সূত্রের খবর, জঙ্গি সংগঠনগুলির কাছে আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তান। সেনা সূত্রে খবর, রাজৌরি-পুঞ্চ এবং কুপওয়ার-কেরান সেক্টরে দিয়ে জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি ঢোকানোর ছক কষছে লস্কর এবং জইশ গোষ্ঠী।
সম্প্রতি, উপত্যকায় শান্তি বিরাজ করছিল। ঘরছাড়া মানুষদের অনেকেই গ্রামে ফিরে এসেছিলেন। কিন্তু, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ফের গোলাগুলি ছোড়া শুরু হওয়ায়, সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।