বালোচকে ফের ‘বাংলাদেশ’ না হতে দিতে বিদ্রোহীদের উপর ড্রোন হামলা পাক সেনার

ইসলামাবাদ, ২১ নভেম্বর– ফের কি বাংলাদেশ ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে পাকিস্তানে? বহুকাল আগে পাকিস্তান ভেঙে তৈরি হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। সেই পথেই কি এবার বালোচ? বালোচ বিদ্রোহ সেই ইঙ্গিতই যেন দিচ্ছে। 

‘দ্য ইউরেশিয়ান টাইমস’-এর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, এবার যুদ্ধক্ষেত্রে ড্রোন নামিয়ে যুদ্ধে নতুন মাত্রা যোগ করল ইসলামাবাদ। বালোচিস্তানে পাক সেনা ও বালোচ বিদ্রোহীদের মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। এবার যুদ্ধের ময়দানে বিদ্রোহীদের নাস্তানাবুদ করতে চিন থেকে আনা সিএইচ-৪বি কমব্যাট ড্রোন ব্যবহার করছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। বিগত কয়েক বছরে দেশটির সবচেয়ে বড় প্রদেশ বালোচিস্তানে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ফাইটার জেট ও আ্যটাক হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে পাক সেনা। তবে সূত্রের খবর, থামতে রাজি নয় বালোচরাও। তাদের প্রত্যাঘাতে বিধস্ত পাক সেনাও । পাক সেনার বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালাচ্ছে ‘বালোচিস্তান ন্যাশনাল আর্মি’। সূত্রের খবর, চলতি বছরই ‘বালোচিস্তান রিপাবলিকান আর্মি’ ও ‘ইউনাইটেড বালোচ আর্মি’ এক ছাতার তলায় আসায় নতুন সংগঠনটি তৈরি হয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, চলতি মাসেই বালোচিস্তানের বলান অঞ্চলে বিদ্রোহীদের ডেরায় ভয়াবহ হামলা চালায় পাকিস্তানি ফৌজ। ওই অভিযানে চিনা ড্রোন ব্যবহার করেছে পাক সেনা। হামলা চালাচ্ছে পাক ফাইটার জেট ও কমব্যাট হেলিকপ্টার। বালোচদের বিরুদ্ধে এসএসজি কমান্ডো বাহিনী মোতায়েন করেছে ইসলামাবাদ। পালটা মার দিচ্ছে বালোচ মিলিশিয়াগুলি। তাদের হামলায় মৃত্যু হয়েছে পাক সেনার দুই কমান্ডোর।

উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালের ১১ অগস্ট ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হয়েছিল দেশীয় রাজ্য কালাত। ১২ অগস্ট কালাতের শাসক মির সুলেমান দাউদ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু সেই স্বাধীনতার মেয়াদ ছিল মাত্র সাত মাস। ১৯৪৮-এর ২৭ মার্চ পর্যন্ত। বালোচিস্তানের মানুষের মণে সেই দিন আজও পরাধীনতার যন্ত্রণা আরও বাড়িয়ে তুলে। তবে বালোচরা থেমে নেই। পাক সেনার বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম চালাচ্ছেন তাঁরা। গত ফেব্রুয়ারি মাসে বালোচিস্তানে নির্বিচারে গুমখুন করছে পাক সেনা বলে রাষ্ট্রসংঘে অভিযোগ জানান ‘খান অফ কালাত’। শুধু তাই নয়, দখলদার পাকিস্তানের হাত থেকে ওই অঞ্চলের মুক্তি নিশ্চিত করার আরজিও রাখেন তিনি। বলে রাখা ভাল, বর্তমান বালোচিস্তানের প্রাচীন কালাত সাম্রাজ্যের রাজাকে বলা হয় ‘খান অফ কালাত’।