• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

সংসদে অনাস্থা-আলোচনা এগিয়ে নিয়ে আসার দাবি, দাবি জানিয়ে স্পিকারকে চিঠি দিল বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’  

  দিল্লি, ৩ অগাস্ট – অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনার দিনক্ষণ এগিয়ে আনা হোক, দাবি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র। এই নিয়ে বিরোধীরা লোকসভার স্পিকারকে একটি চিঠি পাঠিয়ে অনাস্থা বিতর্কের দিন এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু করতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা আগামী ৮ অগস্ট দিন স্থির  করলেও, তা মানতে রাজি নয় বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।

  দিল্লি, ৩ অগাস্ট – অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনার দিনক্ষণ এগিয়ে আনা হোক, দাবি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র। এই নিয়ে বিরোধীরা লোকসভার স্পিকারকে একটি চিঠি পাঠিয়ে অনাস্থা বিতর্কের দিন এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু করতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা আগামী ৮ অগস্ট দিন স্থির  করলেও, তা মানতে রাজি নয় বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’।

মণিপুর ইস্যুতে প্রথম দিন থেকেই সংসদের উভয় কক্ষে ধারাবাহিক ভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন বিরোধী সাংসদরা। অচল হয়ে পড়ে চলতি বাদল অধিবেশন। পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা সংসদে আসবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এই বাদানুবাদের মাঝেই বিরোধী জোটের দাবি, অনাস্থা প্রস্তাবের আলোচনার দিনক্ষণ এগিয়ে আনা হোক। প্রসঙ্গত, আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়, আগামী ৮ থেকে ১০ অগস্ট পর্যন্ত অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর আলোচনা হবে সংসদে। ১০ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে সংসদে জবাবি ভাষণ দেবেন। উল্লেখ্য, আগামী ১১ অগস্ট বাদল অধিবেশন শেষ হওয়ার কথা।

সংসদীয় বিধি অনুযায়ী লোকসভার স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস গ্রহণ করার ১০ দিনের মধ্যেই সংসদে বিতর্ক শুরু হওয়ার কথা। এ বিষয়ে দিন স্থির করার ক্ষমতা একমাত্র রয়েছে স্পিকারের। সেই বিধি মেনেই ২৬ জুলাই জমা পড়া অনাস্থা নোটিসের ভিত্তিতে মঙ্গলবার লোকসভার স্পিকার দিন স্থির করে সিদ্ধান্ত জানান। ঘটনাচক্রে, সংসদের চলতি বাদল অধিবেশন শেষ হচ্ছে ১০ অগস্ট। বিরোধীদের প্রশ্ন, অনাস্থা নিয়ে বিতর্কের জন্য বাদল অধিবেশনের শেষ তিনটি দিনই কেন রাখা হল ?

এদিকে মণিপুর ইস্যুতে মোদি যতদিন না সংসদে বক্তব্য রাখবেন, ততদিন বিরোধীরা তাদের বিক্ষোভ জারি রাখবেন বলে জানিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে সংসদে যাতে স্বাভাবিক পরিবেশে কাজকর্ম শুরু হয়, তার জন্য অনাস্থা প্রস্তাব এগিয়ে আনার দাবি জানাল ইন্ডিয়া জোট। বিরোধীদের অভিযোগ, এই হট্টগোলের মধ্যে সরকার কোনরকম আলোচনা ছাড়াই পরপর বিল পাশ করিয়ে নিচ্ছে। বিরোধীদের দাবি, তারা এই সব আলোচনায় অংশ নিতে চান।

প্রসঙ্গত, অনাস্থা প্রস্তাবের মাধ্যমে সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে চ্যালেঞ্জ করে বিরোধীপক্ষ। এটি একটি সংসদীয় প্রক্রিয়া। বিরোধীরা এই প্রস্তাবের ডাক দিয়ে যাচাই করে নিতে চায় যে, সরকার মসনদে থাকার যোগ্য কি না। সংসদীয় বিধি বলছে, সংসদের যেকোনও সদস্যই এই অনাস্থা প্রস্তাবের ডাক দিতে পারেন। আর তাঁর সেই প্রস্তাবকে সমর্থন জানাতে হবে অন্তত ৫০ জন সাংসদকে।

প্রসঙ্গত , এর আগে দেশে মোট ২৭ টি অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সংসদে আলোচনা হয়েছে। দেশের প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল ১৯৬৩ সালে। তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু।  দেশের তিন প্রধানমন্ত্রী, মোরারজি দেশাই, ভিপি সিংহ এবং অটলবিহারী বাজপেয়ী বিরোধীদের আনা এমন অনাস্থা প্রস্তাবেই গদি হারান । ১৯৯৯ সালে ১ ভোটে অনাস্থা প্রস্তাব হেরেছিল তৎকালীন অটল বিহারী বাজপেয়ীর সরকার। এরপর ২০০৩ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনেন সোনিয়া গান্ধি । এছাড়া ২০১৮ সালে নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধেও অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়। তবে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও মোদি সরকার পড়ে যাওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ, ৫৪৩ সাংসদের লোকসভায় সরকার ফেলে দেওয়ার  জন্য প্রয়োজন ২৭২ সাংসদের সমর্থন। সেখানে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র সাংসদ সংখ্যা ৩৩২। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরসিমহা  রাওয়ের পর মোদিই দু’টি অনাস্থা জয়ের নজির রাখবেন। উল্লেখ্য , ২০১৮ সালের জুলাই মাসে সংসদের বাদল অধিবেশনেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি । সেই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছিল কংগ্রেস-সহ কয়েকটি বিজেপি-বিরোধী দল। কিন্তু বিজেপির সংখ্যাধিক্যের জোরে বিরোধীদের আনা প্রস্তাব খারিজ হয়ে যায়।

বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে যে মোদি সরকার টলবে না তা অজানা নয় বিরোধীদেরও। তবে সংসদে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ জোটের ছবি তুলে ধরতেই এই কৌশল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক  বিশেষজ্ঞরা।