প্রিয়াঙ্কা গান্ধির স্বামী রবার্টের বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার প্রমান নেই, আদালতে জানাল বিজেপি পরিচালিত হরিয়ানা সরকার

চন্ডীগড় , ২১ এপ্রিল – কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধির স্বামী  রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার কোন প্রমান নেই। আদালতে জানাল বিজেপি পরিচালিত হরিয়ানা সরকার।  ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হন। তার আগে হরিয়ানার ভোট প্রচারে গিয়ে মোদি সরাসরি অভিযোগ করেন, “সোনিয়া গান্ধির জামাই জমি দুর্নীতিতে যুক্ত। এটাই কংগ্রেসের পরিবারতন্ত্র আর দুর্নীতির উদাহরণ ”। শুক্রবার তাঁর দল বিজেপি পরিচালিত হরিয়ানা সরকার সেই অভিযোগ ‘মিথ্যা’ বলে মেনে নিল। পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানানো হল, কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধির স্বামী রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি।

রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটির সঙ্গে রিয়েল এস্টেট সংস্থা ডিএলএফের গুরুগ্রামে জমি সংক্রান্ত চুক্তিতে বেআইনি কোনরকম যোগসূত্র মেলেনি। আদালতে একথা জানায় হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের সরকার। হলফনামায় লেখা হয়, ‘‘স্কাইলাইট হসপিটালিটি ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ডিএলএফ ইউনিভার্সাল লিমিটেডকে সাড়ে ৩ একর জমি বিক্রি করেছিল। সেই লেনদেনে অনিয়ম হয়েছিল বলে মানেসরের মহকুমা শাসক রিপোর্ট দিয়েছিলেন।’’.রবার্টের সংস্থার জমি-চুক্তিতে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে হরিয়ানা পুলিশ এখনও তদন্ত করছে। একথা জানিয়ে হলফানামায় বলা হয়েছে, ‘‘২০২৩ সালের ২২ মার্চ সিট গড়া হয়েছে।’’ 

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ডিএলএফ-এর সঙ্গে বঢরার ওই জমি-চুক্তি খারিজ করে দেন হরিয়ানার জমি রাজস্ব দফতরের আমলা অশোক খেমকা। কিন্তু হরিয়ানার তৎকালীন কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার সরকার পরে এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গড়েছিল। গত জুলাই মাসে ওই কমিটি জানিয়ে দেয়, রবার্টের জমি-চুক্তি বৈধ ছিল।
২০১৪-র অক্টোবরে হরিয়ানায় বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন করে রবার্টের বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। সেই বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি । কয়েক বছর পরে রবার্ট এবং হুডার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্তে নামে খট্টর সরকারের পুলিশ। যদিও কংগ্রেস অবশ্য শুরু থেকেই বলে , যাবতীয় স্ট্যাম্প ডিউটি দিয়েই ২০০৮ সালে বাণিজ্যিক এলাকায় সাড়ে তিন একরের জমি কেনে  রবার্ট বঢরার সংস্থা। তার পর লাইসেন্সও পায়। ২০২০ সালে জমিটির ন্যায্য কর মিটিয়ে ডিএলএফ সংস্থাকে বিক্রি করে তারা। গোটা প্রক্রিয়ায় কোনও অনিয়ম হয়নি। 

রবার্টের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে ইডিও। ২০১৯ সালে একবার ইডি দফতরে হাজিরা দেওয়ার সময়ে সংবাদমাধ্যমকে প্রিয়াঙ্কা বলেন, “তদন্তের জন্য নয়। আমাদের কলঙ্কিত করতে এই সমন। কিন্তু আমরা পালিয়ে যাওয়ার লোক নই। মাথা উঁচু করে লড়াই করব। সত্যি প্রমাণিত হবে ”। ইডি-র তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।কিন্তু হরিয়ানার বিজেপি সরকার যেভাবে আদালতে হলফনামা দিল তাতে রবার্ট তথা ‘সোনিয়া গান্ধির জামাই’ দুর্নীতিমুক্ত তা শুক্রবার কার্যত স্বীকার করে নিল মোদির দল বিজেপি পরিচালিত হরিয়ানা সরকার।