• facebook
  • twitter
Friday, 22 November, 2024

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা, প্রস্তাব গ্রহণ করলেন অধ্যক্ষ ওম বিড়লা  

দিল্লি, ২৬ জুলাই – মণিপুরে মহিলাদের উপর নির্যাতন এবং বহু মানুষের মৃত্যুর অভিযেগে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আজ লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী জোট। মনিপুরের ঘটনা নিয়ে সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে বুধবারই সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব পাশের অনুমতি দেন অধ্যক্ষ। বিরোধী জোটের তরফে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস পেশ করেন। এরপর অধ্যক্ষ প্রশ্ন

দিল্লি, ২৬ জুলাই – মণিপুরে মহিলাদের উপর নির্যাতন এবং বহু মানুষের মৃত্যুর অভিযেগে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে আজ লোকসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী জোট। মনিপুরের ঘটনা নিয়ে সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়ে বুধবারই সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব পাশের অনুমতি দেন অধ্যক্ষ। বিরোধী জোটের তরফে কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস পেশ করেন। এরপর অধ্যক্ষ প্রশ্ন করেন কতজন সাংসদ এই প্রস্তাবে সম্মতি দিচ্ছেন ?  অধিবেশন কক্ষের অধিকাংশ সাংসদ সেই প্রস্তাব পেশে  সম্মতি দিলে , অধ্যক্ষ সেটি গ্রহণ করেন।  তবে অধ্যক্ষ জানান, অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় পরে নির্ধারণ করা হবে। 

কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার অনুমতি দিলেন লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা।

এদিকে এই আবহে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি পুরনো বক্তব্য নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, সংসদে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী জানাচ্ছেন যে, ২০২৩ সালে আবারও অনাস্থা প্রস্তাব আনার ‘সুযোগ পাবেন’ বিরোধীরা। ভিডিওটি টুইট করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিংহ। ঘটনাচক্রে ২০২৩ সালেই অনাস্থা প্রস্তাব পেশ হল সংসদে। প্রস্তাব গ্রহণও করেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। তবে কবে এই বিষয়ে আলোচনা হবে, তা পরে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
২০১৯ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগে সংসদের বাজেট অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির বক্তব্য নিয়ে বিতর্ক চলছিল। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুসারে, সেই সময়  বক্তব্য রাখতে উঠে বিরোধীদের উদ্দেশে মোদি বলেছিলেন, “ প্রস্তুত  থাকুন, কারণ আপনারা আবার ২০২৩ সালে অনাস্থা প্রস্তাব আনার সুযোগ পাবেন।” এই ভিডিও দেখিয়ে বিজেপির তরফে মোদি র ‘নির্ভুল ভবিষ্যৎবাণী’র প্রশংসা করা হচ্ছে। তবে রাজনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, চার বছর আগে সংসদে ওই বক্তব্য রেখে মোদি বিরোধীদের উদ্দেশে এই বার্তাই দিতে চেয়েছিলেন যে, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ক্ষমতায় আসার ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত। বিরোধীরা ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে আবার অনাস্থা প্রস্তাব আনতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন তিনি।
বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও মোদি সরকারের কোনও সঙ্কট তৈরি হবে না। কারণ খাতায় কলমে ৩৩২ জন সাংসদের সমর্থন রয়েছে শাসক পক্ষের দিকে। অর্থাৎ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে লোকসভায় এই মুহূর্তে ক্ষমতায় রয়েছে মোদি সরকার।  বিরোধী দলগুলির অবশ্য বক্তব্য, মণিপুর নিয়ে সরকারের ‘নীরবতা’ ভাঙাতেই তারা সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। এই প্রসঙ্গে ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম শরিক শিবসেনার তরফে বলা হয়েছে, মণিপুর নিয়ে বক্তব্য রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদি যাতে সংসদে আসেন, সেই কারণেই অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে। বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব সম্পর্কে সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী বলেন, “প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং বিজেপির উপর মানুষের আস্থা রয়েছে। বিরোধীরা আগেও অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। কিন্তু মানুষ ওদের উচিত শিক্ষা দিয়েছে।”
লোকসভার অধ্যক্ষ ও বিড়লা অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে বলেন, ‘ সব দলের নেতাদের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করব , তারপর আপনাদের জানাব, কোন সময়ে এই অনাস্থা প্রস্তাব আলোচনার জন্য সংসদে তোলা হবে।  
উল্লেখ্য, মেইতেই এ কুকি জনজাতির মধ্যে গত ৩ মার্চ থেকে শুরু করে গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে উত্তপ্ত মণিপুর। সম্প্রতি মণিপুরে দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে ঘোরানো এবং গণধর্ষণের ঘটনার কথা প্রকাশ্যে এসেছে।  ৭৮ দিন পর মণিপুর নিয়ে মুখ খোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, ‘‘এই ঘটনা যে কোনও সভ্য সমাজের লজ্জা।’’ তবে তাতে ক্ষোভ দমানো যায়নি। মণিপুরের ঘটনায় সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির দাবিতে সরব বিরোধীরা। ২০ জুলাই সংসদের বাদল অধিবেশনের শুরুর দিন থেকেই এই ইস্যুতে উত্তাল হয়েছে লোকসভা ও রাজ্যসভা। বিরোধীদের প্রতিবাদের জেরে বারবার মুলতুবি হয়েছে অধিবেশন। প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করা হয়েছে। কিন্তু সংসদীয় মন্ত্রীর তরফে এ নিয়ে কোন উলেখ করা হয়নি। এরপর ইন্ডিয়া জোটের তরফে অনাস্থা আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।