নীতীশের দাবি, লোকসভার ভোট এ বছরই, বিজেপি পাল্টা, নির্বাচন এগচ্ছে বিহারেও

পটনা, ১৫ জুন– দেশের পরবর্তী লোকসভা ভোট নিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের ধারণা এ বছরই হতে পারে পরের লোকসভা ভোট। যদিও পুরনো নির্ঘণ্ট অনুসরণ করলে দেশে পরবর্তী লোকসভা ভোট ২০২৪-এর এপ্রিম-মে মাস নাগাদ হওয়ার কথা। তবে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ততদিন অপেক্ষা করবেন না। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এ বছরই হতে পারে পরের লোকসভা ভোট। তবে মুখ্যমন্ত্রীর এই কথায় তীব্র বিরোধিতার পাশাপাশি তাঁকে নানাভাবে কটাক্ষ করা শুরু করেছে বিজেপি।

সরকারি অনুষ্ঠানে নীতীশের এই বক্তব্য ঘিরে উত্তাল বিহারের রাজনীতি। যদিও রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, নভেম্বরে রাজস্থান, ছত্তীশগড়, মধ্যপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানার বিধানসভা ভোটের সঙ্গে লোকসভার নির্বাচন করিয়ে নিতে পারেন নরেন্দ্র মোদি। যদিও এনিয়ে দলে দুটি মত আছে। একদলের মতে, তাতে বিধানসভা ভোটে কেন্দ্রের সাফল্যের খতিয়ান তুলে ধরে লাভবান হতে পারে দল। ভিন্ন মত হল, একত্রে ভোট হলে রাজ্যের ব্যর্থতার দায় লোকসভার ভোটে প্রভাব ফেলতে পারে। যদিও চার রাজ্যের মধ্যে শুধু মধ্যপ্রদেশেই বিজেপি ক্ষমতায় আছে।

বিজেপির রাজ্য সভাপতির বক্তব্য, ‘বিহারের মুখ্যমন্ত্রী জানেন লোকসভা ভোটের পর তিনি আর মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন না। মহাজোট ছত্রখান হয়ে যাবে। শরিক দলগুলিই তাঁকে কুর্সি থেকে টেনে নামাবে। তাই সরকারি কর্মচারীদের ভয় দেখাচ্ছেন ভোটের কথা বলে।


রাজ্যের গ্রামীণ বিকাশ দফতরের একটি প্রকল্পের উদ্বোধন করার সময় নীতীশ বলেন হিসাব মতো প্রকল্পটি জানু়যারি মাসে শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু আমি বলব, আরও আগেই কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হোক। কারণ, যা পরিস্থিতি তাতে এ বছরই কোনও সময় লোকসভার ভোট হতে পারে। ভোট ঘোষণা হলে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যাবে।

নীতীশের কথায় ব্যাখ্যা দিয়ে তাঁর দল জনতা দল ইউনাইটেডের মুখমাত্র নীরজ কুমারের কথায়, ‘বিজেপি হিমাচলপ্রদেশ ও কর্নাটকে হারের পর দিশেহারা অবস্থায় পড়েছে। সেই কারণে বিলম্ব না করে ভোট এগিয়ে আনতে পারেন মোদীজি।’

অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি সম্রাট চৌধুরীর কটাক্ষ, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কি মোদীজির কথা হয়েছে। ভোট এগিয়ে আনার অধিকার একমাত্র প্রধানমন্ত্রীরই আছে।’ বিজেপি পাল্টা প্রচার শুরু করেছে, নীতীশ কি বিহারে বিধানসভার ভোট এগিয়ে আনতে চলেছেন। সেই কারণেই কি সরকারি প্রকল্প রূপায়ণ নিয়ে এত তাড়াহুড়ো মুখ্যমন্ত্রীর। খাতায় কলমে বিহারে বিধানসভার ভোট হওয়ার কথা ২০২৫-এ।

এদিকে, নীতীশের আমন্ত্রণে ২৩ জুন পাটনায় হতে চলা বিরোধী দলগুলির সমাবেশকে সামনে রেখে বিজেপি বিহারে বড় কর্মসূচি নিতে চলেছে। ২৩-এর পর পাটনায় সমাবেশ অথবা রোড শো করতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা। তাঁদের উপস্থিতিতে এনডিএ-তে যোগ দিতে পারে হিন্দুস্থায়ী আওয়াম মোর্চা। বিহারের শাসক জোট থেকে এখন আনুষ্ঠানিকভাবে বেরিয়ে না গেলেও মন্ত্রিসভা ত্যাগ করেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জীতনরাম মাঝির দল। জীতনের ছেলেই ছিলেন মন্ত্রিসভার তফসিলি কল্যাণ বিষয়ক দফতরের মন্ত্রী। নীতীশের সঙ্গে গোলমালের জেরে এই সিদ্ধান্ত।