দিল্লি, ১৬ অগাস্ট – লিঙ্গ সম্পর্কিত প্রাচীন ধারণার বশবর্তী হয়ে অনেক সময়ই আপত্তিকর শব্দ তাঁদের পর্যবেক্ষণ কিংবা রায়ে ব্যবহার করেন বিচারপতিরা। তাঁদের এই বিষয়ে সজাগ করতে ‘হ্যান্ডবুক’ প্রকাশ করলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। সেই হ্যান্ডবুকে ৪০টি শব্দকে চিহ্নিত করে সেগুলি আর ব্যবহার না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সেখানে উল্লেখ আছে মহিলাদের নিয়ে অসম্মানজনক শব্দ আদালতে বলা যাবে না। তেমনি দেহব্যবসার সঙ্গে যুল্ট বেশ কিছু শব্দও আদালতে উল্লেখ করা যাবে না।
হ্যান্ডবুক প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, “এই ধরনের শব্দগুলি যথাযথ নয়। সচরাচর এগুলি মেয়েদের প্রতি ব্যবহার করা হয়েছে।” একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন যে, আগের রায়গুলি ভুল ছিল এমন নয়। কিন্তু লিঙ্গ সম্পর্কিত বদ্ধমূল ধারণা বিচারব্যবস্থাকে কী ভাবে প্রভাবিত করে, তা বোঝাতেই শব্দগুলির উল্লেখ করা হয়েছে হ্যান্ডবুকে।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, “সাধারণ মানুষের মতো এক জন বিচারকও তাঁর অবচেতন মনে কিছু বদ্ধমূল ধারণার উপরে ভরসা রাখেন। কিন্তু মানুষ বা কোনও গোষ্ঠীর উপরে এমন ধারণার উপরে ভিত্তি করে রায় লেখা হলে অপূরণীয় ক্ষতি।” কোন কোন শব্দে কোপ পড়তে চলেছে তার তালিকা এবং সেগুলির পরিবর্তে কোন শব্দ ব্যবহার করা যাবে, তার উল্লেখ ওই হ্যান্ডবুকে করা হয়েছে। যেমন ‘প্রস্টিটিউট’ শব্দের পরিবর্তে ‘যৌনকর্মী’ শব্দটি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। যৌন হেনস্তা ও ধর্ষণের ক্ষেত্রেও মহিলাদের সম্পর্কে অসম্মানজনক শব্দ উল্লেখ করা যাবে না। কোনও মহিলার সতীত্বের বিবরণও দেওয়া যাবে না আদালতে। কোনও মহিলাকে ভারতীয় বা পশ্চিমি হিসাবে আলাদা করে অভিহিত করা যাবে না, সকলকেই শুধুমাত্র মহিলা বলে সম্বোধন করতে হবে। সুপ্রিম কোর্টে প্রকাশিত নতুন হ্যান্ডবুকে এমন ৪০টি শব্দের উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলি বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে ব্যবহৃত হবে না।