কলকাতা, ২১ সেপ্টেম্বর – পঞ্চান্ন সদস্য বিশিষ্ট অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াড গড়ল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি ক্যাম্পাস ও হস্টেলগুলির সব গেটে সিসিটিভি বসানোর কাজ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার থেকে। বুধবার হস্টেল নিয়ে কড়াকড়ি করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রাত ১০টার পরে আবাসিকদের হস্টেলের বাইরে থাকা নিষিদ্ধ করা হল। হস্টেল থেকে অনুপস্থিত থাকলে সংশ্লিষ্ট সুপারিটেন্ডেন্টের থেকে আগাম অনুমতি নিতে হবে । হস্টেলগুলির গেট বন্ধ থাকবে রাত ১০ থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত। সময়ে গেট খোলা ও বন্ধ করার এই ব্যবস্থা যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, তা সুনিশ্চিত করার দায়ভার ন্যস্ত করা হয়েছে গেটে মোতায়েন থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের উপর।
হস্টেলের আবাসিকদের গতিবিধি নিয়ে নয়া নিয়মগুলি জানিয়ে এদিনই ডিন অফ স্টুডেন্টস অরুণকুমার মাইতি স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয়েছে। তা অনুযায়ী, ভিজিটরদের সঙ্গে আবাসিকরা থাকতে পারবেন ভিজিটর রুমে বা তা না থাকলে টিভি-কাম-রিক্রিয়েশন রুমে। আবাসিকদের সঙ্গে দেখা করতে আসা সকল ভিজিটরদের গেটে থাকা রেজিস্টার খাতায় নাম, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত করে ঢুকতে হবে। তাঁর ভিজিটর যেন এই নিয়ম মেনেই প্রবেশ করেন, তা সুনিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্ট আবাসিককে। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে হস্টেল বোর্ডারশিপ পরিচয়পত্র। বলা হয়েছে, আবাসিকদের এই পরিচয়পত্র সবসময় সঙ্গে রাখতে হবে এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত নিরাপত্তা কর্মীরা দেখতে চাইলে তা দেখাতেও হবে। সমস্যা এড়াতে মেন হস্টেল ক্যাম্পাসের কোয়ার্টারে থাকা হস্টেল বা মেস কর্মীদেরও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে, রাতে কোনও ঘটনা ঘটলে বা প্রয়োজন হলেই যাতে স্কোয়াডের কিছু সদস্য দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যেতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসের কাছাকাছি থাকা বেশ কয়েকজনকে নব নির্মিত স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ। তবে, শুধু এই মানদণ্ডের ভিত্তিতেই সকল সদস্য নির্বাচন করা হয়নি। বুদ্ধদেব বাবুর কথায়, “সবরকম মিলিয়ে নেওয়া হয়েছে। দূরত্ব নির্বিশেষে সক্রিয় ব্যক্তিদেরও যেমন রাখা হয়েছে। তেমনি কিছু সংখ্যককে রাখা হয়েছে, যাঁরা রাতের দিকে প্রয়োজন হলেই চলে আসতে পারেন। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোয়ার্টারে যাঁরা থাকেন তাঁদের বিবেচনা করা হয়েছে।”
২০২৩-’২৪ শিক্ষাবর্ষের অ্যান্টি র্যাগিং স্কোয়াডের সদস্য সংখ্যা ছিল ১৮। সেই সংখ্যা বেড়ে একেবারে ৫৫ হয়েছে। নেপথ্য কারণ নিয়ে বুদ্ধদেব সাউ বলেন, “যাদবপুরের মতো বৃহৎ পরিসরের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ১৫-২০ জনের স্কোয়াড যথেষ্ট ছিল না। স্কোয়াডের কর্মকাণ্ড পরিচালনা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। তাই ৫৫ জনের স্কোয়াড করা হল।” স্কোয়াডে শিক্ষকদের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া, শিক্ষাকর্মী এবং ছাত্র সংসদগুলির নির্বাচিত প্রতিনিধিদের রাখা হয়েছে।