বিজেপির আমলে সংখ্যালঘু মুসলিম থেকে তপশিলী জাতি আদিবাসী সকলে অত্যাচরিত।এমনকি সাংবাদিকরাও খুন হয়েছে। এরা গদা আর তলােয়ার নিয়ে মানুষের উপর আক্রমণ করে। দিল্লির সরকার বদেল দিন। নরেন্দ্র মােদিকে সরিয়ে দিন। মােদির আমলে বারাে হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছে। বিজেপি উন্নয়ন করে না, দাঙ্গা বাধায়। কেন্দ্রে সরকার গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে তৃণমূল। পাঁচ বছরের মধ্যে সাড়ে চার বছর বিদেশে ঘুরেছে মােদি। আজ নদিয়ার সংখ্যালঘু অধ্যুষিত কালীগঞ্জের পানিঘাটা এবং মতুয়া প্রধান এলাকা দুষ্কৃতীদের হাতে নিহত বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের অঞ্চল বগুলায় জোড়া সভায় রীতিমত ঝাঁঝালাে ভাষায় এভাবেই মােদিকে আক্রমণ করলেন মমতা ব্যানার্জি। পানিঘাটা এবং বগুলায় সভার পরই কৃষ্ণনগরে পদযাত্রায় হাঁটলেন তৃণমূল সুপ্রমাে। পূর্ব ঘােষণা ছাড়াই কৃষ্ণনগর ক্ষৌনিশ পার্ক থেকে পােস্ট অফিস মােড় হয়ে কদমতলা পর্যন্ত রােডশাে করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এবারের লড়াই কঠিন। মমতা ডাক দিয়েছেন ৪২-এ ৪২ করতে হবে। জনসভা আর পদযাত্রার মাধ্যমে জনসংযােগ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জননেত্রী নির্বাচনের উত্তাপ কয়েক ধাপ বাড়িয়ে দিলেন। জনসভার মধ্যে দিয়ে আবেদন আর পদযাত্রার মানুষের কাছে পৌছানাের চেষ্টা। নদিয়ার দুটি লােকসভা বিশেষত কৃষ্ণনগরে বিজেপির সঙ্গে লড়াই একেবারে সােয়ানে-সেয়ানে। কৃষ্ণনগরে চার কিমি হাঁটলেন। পাশে প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। কৃষ্ণনগরে তৃণমূল, বিজেপি ছাড়াও বামফ্রন্ট প্রার্থী ড. শান্তনু ঝা লড়াইয়ে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেও বিজেপিকে এক ইঞ্চিও মাটি ছাড়তে রাজি ননন মমতা। তাই কৃষ্ণনগর লােকসভার পানিঘাটা এবং রানাঘাট লােকসভার বগুলায় জনসভার পরপরই হঠাৎ কৃষ্ণনগরে পদযাত্রার সিদ্ধান্ত নেন।
এদিকে কৃষ্ণনগরে বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হয়ে যাওয়ায় ওই বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন মতুয়া নেতা প্রমথরঞ্জন বােস। বগুলার জনসভায় মঞ্চে উঠেই মমতা আবেগমথিত গলায় বলেন, ‘সত্যজিতের হত্যাকারীদের ধিক্কার জানাই। আপনারা এই পরিবারের পাশে আছেন। আপনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। সত্যজিতের স্ত্রী রূপালী ছােট্ট শিশু নিয়ে সারাজীবন কী করবে। কাজের মধ্যে রাখতেই ওকে প্রার্থী করেছি।’
পানিঘাটার জনসভা থেকে রীতিমত বিদ্রুপের সুরে মমতা বলেন, ‘জলাতঙ্ক রােগের মতাে আজ মােদি হারাতঙ্ক রােগে ভুগছে। রােজ উল্টোপাল্টা বকছে। যদি মিথ্যে কথার কোনও পােস্ট থাকত ওকে আগে দেওয়া উচিত। আগে বলেছে চাওয়ালা। এখন বলছে চৌকিদার। মমতার প্রশ্ন, চৌকিদার দেশ সামলাবে কী করে। আমি গ্রামের চৌকিদার পছন্দ করি। মােদি চৌকিদার পছন্দ করি না। ওরা বলছে বাংলায় এনআরসি করবে। আসামে চল্লিশ হাজার মানুষের নাম বাদ গিয়েছে।’
মমতা মােদির উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে বলে, ‘এটা তােমার নির্বাচন। মমতা ব্যানার্জি তােমার কাছে কৈফিয়ৎ চাইবে। আমি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন নাকি কোনও কাজই হয়নি। মােদি কথা বললে এবার নিকোপ্লাসটার লাগিয়ে দেবো। তুমি প্রধানমন্ত্রী হয়ে একটাও রেলপ্রকল্প দাওনি বাংলাকে। মােদিবাবু আগে দিল্লি সামলা, তারপর দেখিস বাংলা।’