কোভিড ঠেকাতে রাজ্যের প্রস্তুতি হাল খতিয়ে দেখতে মক ড্রিল সোমবার থেকে

 দিল্লি, ১০ এপ্রিল– ফের কি ২০১৯ আতংক ফিরতে চলেছে। দেশজুড়ে ফের ঊর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণের গ্রাফ সেই আশংকার দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যদিও এবার আগে-ভাগেই প্রস্তুত কেন্দ্র সরকার। কোভিড মোকাবিলায় ঠিক কতখানি প্রস্তুত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলি, তা খতিয়ে দেখতেই আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে মক ড্রিল ।

সোম এবং মঙ্গলবার ধরে সারা দেশের হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলিতে চলবে এই মক ড্রিল। করোনা ঠেকাতে রাজ্যে রাজ্যে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, স্বাস্থ্য পরিষেবা কেমন, সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলি কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে নজরদারি চালানো হবে।

আগামী দিনে যদি কোভিডের কোনও ঢেউ আসে, তবে তার মোকাবিলার জন্য রাজ্যে রাজ্যে হাসপাতালগুলি কতটা প্রস্তুত, মহড়ার মাধ্যমে দেখে নেওয়া হবে সেটাই। এই উদ্য়োগকেই বলা হচ্ছে মক ড্রিল।


কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া নিজে উপস্থিত থেকে সরেজমিনে খতিয়ে দেখবেন প্রস্তুতি। হরিয়ানার ঝাঝ্ঝরে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

করোনা নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী। সেদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শতাধিক চিকিৎসক। সেদিন মনসুখ মাণ্ডবিয়া সমস্ত রাজ্যগুলির স্বাস্থ্যমন্ত্রীদের সচেতন থাকতে বলেন এবং স্বাস্থ্য পরিসেবার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেন। কোভিড মোকাবিলায় এখনও ৫ ধাপের টেস্ট, ট্র্যাক, চিকিৎসা, টিকাকরণ এবং নিয়ম মেনে চলাই একমাত্র কৌশল বলে জানিয়েছেন তিনি।

আগেই কোভিড অতিমহামারীর তিনটি ঢেউ আছড়ে পড়েছিল ভারত জুড়ে। তারপর বেশ কিছুদিন স্তিমিত ছিল সংক্রমণের হার। সম্প্রতি ফের ঊর্ধ্বমুখী করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে কোভিডের চতুর্থ ঢেউ আসতে পারে বলে আশঙ্কা করেই তা মোকাবিলায় কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছে না কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রক।

অতিমহামারীর তৃতীয় ঢেউ পর্যন্ত করোনা ভাইরাস ওমিক্রোনের সাব ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭-এর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু এখন নতুন করে সংক্রমণ ছড়ানোর পিছনে দায়ী অন্য একটি সাব ভ্যারিয়েন্ট এক্সবিবি১.১৬। যদিও এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দাবি, সাব ভ্যারিয়েন্টগুলি অতটাও বিপদজনক নয়। তা সত্ত্বেও চিকিৎসা ব্যবস্থা যাতে ভাইরাসের মোকাবিলায় সমস্ত রকম ভাবে প্রস্তুত থাকে, সেটুকুই নিশ্চিত করতে চাইছে কেন্দ্র।

কোভিড ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলি। জেলায় জেলায় স্বাস্থ্য পরিষেবা কেমন, করোনা আক্রান্তদের জন্য চিকিৎসার ব্যবস্থা কেমন, কোভিড টেস্ট কেমন হচ্ছে। তাছাড়া দেখা হবে, হাসপাতালগুলিতে আইসোলেশন ওয়ার্ডের হাল কেমন, আইসোলেশন বেড কত আছে, অক্সিজেন বেড ও আইসিইউ বেড ক’টা রয়েছে। ভেন্টিলেটর বেডের সংখ্যা কত, সঙ্কটাপন্ন কোভিড রোগীদের জন্য ভেন্টিলেটর ও তরল অক্সিজেন কী পরিমাণে রয়েছে।

করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমনের মধ্যেই দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য ফের জনসমক্ষে বেরোলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে। স্কুলগুলি সহ হরিয়ানার যে কোনও প্রকাশ্য স্থানে মাস্ক পরতেই হবে বলে জানিয়েছে সে রাজ্যের সরকার। মাস্ক বাধ্যতামূলক করেছে পণ্ডিচেরিও। বয়স্ক মানুষ, গর্ভবতী মহিলা এবং লাইফস্টাইল অসুখে আক্রান্তদের জন্য মাস্ক বাধ্যতামূলক করেছে কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার। অন্যদিকে বিদেশ থেকে নামা সমস্ত যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং করতেই হবে বলে আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। কোভিডবিধি মেনে চলার জন্য সাধারণ মানুষকে অনুরোধ জানিয়েছে দিল্লি, মহারাষ্ট্র এবং হিমাচলপ্রদেশ প্রশাসনও।