মোদিকে বিঁধে ‘বুড়ো, বড়লোক, একগুঁয়ে’ মন্ত্রী জয়শঙ্করের তিন ভূষণ সোরসকে

দিল্লি, ১৮ ফেব্রুয়ারি– তিনি মুখ খুলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে। তাই তিনি বিজেপি সহ মোদি ঘনিষ্ঠদের নিশানা হবেন সে কথা কি বুঝতে বাকি থাকে। বাস্তবে হলো তাই। মোদিকে করেছিলেন হাঙ্গেরিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান শিল্পপতি জর্জ সোরস। তাই তাঁকে একের পর এক বিঁধতে শুরু করলেন তাবড়-তাবড় নেতা-মন্ত্রীরা। স্মৃতি ইরানির পর এ বার তাঁকে নিশানা করলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও। ওই ধনকুবের শিল্পপতিকে তিন বিভীষণ বুড়ো, বড়লোক এবং একগুঁয়ে বলে কটাক্ষ করেন জয়শঙ্কর।

অস্ট্রেলিয়ার বিদেশমন্ত্রী ক্রিস ব্রাউনের সঙ্গে বৈঠকের পরে জয়শঙ্কর বলেন, ‘মিস্টার সরস এক জন বুড়ো, বড়লোক এবং একগুঁয়ে ব্যক্তি। উনি এখনও মনে করেন যে, তাঁর কথাতেই গোটা বিশ্ব চলবে। আসলে এই সব লোকজন মনে করেন জনমত তৈরি করতে তাঁরা পরিশ্রম করছেন।”

এর আগে সোরস বলেছিলেন, “আদানি শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ার বাজারে যে জালিয়াতির (স্টক ম্যানিপুলেশন) অভিযোগ উঠেছে, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে বিদেশি বিনিয়োগকারী এবং ভারতের সংসদে জবাবদিহি করতে হবে।’’ ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি গৌতম আদানির গোষ্ঠী কারচুপি করে তাদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে, অভিযোগ তুলেছে আমেরিকার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ। বৃহস্পতিবার জার্মানির মিউনিখে নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের মঞ্চ থেকে ৯২ বছরের সোরস প্রশ্ন তোলেন, কেন আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে মোদী এখনও নীরব? তাঁর মতে, ভারতের মতো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় এমন পরিস্থিতি কাম্য নয়।

সোরসের মন্তব্যের পরেই পাল্টা আক্রমণের পথে হেঁটেছিল বিজেপিও। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির অভিযোগ, আদানিকাণ্ড নিয়ে মোদির উত্তর চেয়ে ‘ভারত বিরোধী কাজ’ করেছেন আমেরিকার প্রবীণ শিল্পপতি। বিজেপি নেত্রী বলেন, ‘আমি প্রত্যেক ভারতীয়কে জর্জ সোরোসকে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’ সোরসের মন্তব্যে ‘ভারতীয় গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার চক্রান্তের’ চিহ্নও খুঁজে পেয়েছেন স্মৃতি। যদিও আদানিকাণ্ডের তদন্তে বিরোধীদের যৌথ সংসদীয় তদন্ত কমিটি গড়ার দাবি সম্পর্কে মোদী সরকার কেন নিশ্চুপ, তার কোনও ব্যাখ্যা দেননি তিনি।


প্রসঙ্গত, এর আগে মোদি সরকার কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিল করার পরেও তার বিরোধিতা করেছিলেন সোরস। ২০২০-র জানুয়ারিতে দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছিলেন, “কাশ্মীরের মতো মুসলিম প্রভাবিত অঞ্চলে মোদী সরকারের কঠোর পদক্ষেপ একটা বড় আশঙ্কার বিষয়। মোদীর হিন্দু রাষ্ট্র বানানোর তাগিদ ভারতের গণতন্ত্রকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।’’ সে সময়ও সোরসকে নিশানা করেছিল বিজেপি।