কলকাতা, ১৯ অক্টোবর – মহালয়ার দিন থেকেই প্যান্ডেল হপিং-এ বাড়িয়ে পড়েছেন উৎসাহী জনতা। কলকাতার বিখ্যাত পুজোমণ্ডপগুলি ফাঁকায় ফাঁকায় দেখে নিতে বেরিয়ে পড়লেও হতাশ হতে হয়েছে। কারণ একইভাবে ভিড় এড়াতে মহালয়ার পর থেকেই বেরিয়ে পড়েছেন মানুষ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও পিতৃপক্ষেই ভার্চুয়াল উদ্বোধন করে দেওয়ায় আর ঘরে থাকেননি উৎসাহী প্যান্ডেল হপাররা। আর পুজো দেখতে বেরিয়ে অন্যতম ভরসা মেট্রো। তৃতীয়ার ভিড় ছাপিয়ে গিয়েছে গত বছরের ষষ্ঠীর ভিড়কে। সেদিন মেট্রোয় যাতায়াত করেছেন সাত লক্ষেরও বেশি মানুষ। বুধবার, চতুর্থীতে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় চেপে যাতায়াত করেছেন প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ মানুষ।আর ভিড়ের নিরিখে রবীন্দ্রসদনকে টেক্কা দিয়েছে কালীঘাট। সপ্তমী থেকে নবমী উত্তর-দক্ষিণ পথে সারা রাত মেট্রো চলাচল করবে। এই তিন দিন পূর্ব-পশ্চিম করিডোরে ট্রেন চলবে রাত ১২টা পর্যন্ত।
পুজোর কেনাকাটা এখনও চলছে পুরোমাত্রায়। তার পাশাপাশি ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে পড়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। মেট্রো সূত্রে খবর, গত এক মাস ধরেই মেট্রোয় যাত্রীসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। পুজোর আগে শহরে কেনাকাটা করতে মেট্রোই ভরসা ছিল বেশির ভাগ মানুষের। সেই সঙ্গে ছিল নিত্যদিনের অফিস যাত্রীদের ভিড়। রবিবার থেকে সেই ভিড় আরও বেড়েছে। মেট্রোর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৮ অক্টোবর, চতুর্থীতে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় যাতায়াত করেছেন সাত লক্ষ ৪৯ হাজার ১৬০ জন। গোটা দিনে ওই লাইনে মোট ২৮৮টি ট্রেন চলেছে।
চতুর্থীতে সব থেকে বেশি যাত্রী যাতায়াত করেছেন দমদম স্টেশনে। সেখানে যাত্রীসংখ্যা ছিল ৭৬ হাজার ৫৮৭। এর পরেই এসপ্ল্যানেড। সেখানে যাত্রীসংখ্যা ছিল ৫৩ হাজার ২০। তৃতীয় স্থানে ছিল কালীঘাট। সেখানে যাত্রী সংখ্যা ৫২ হাজার ১২০। রবীন্দ্রসদন দিয়ে যাতায়াত করেছেন ৪৫ হাজার ১০৩ জন।
এই পরিস্থিতিতে অস্বাভাবিক ভিড় সামাল দিতে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে কলকাতা মেট্রো। যে কোনও রকম পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত অতিরিক্ত রেল সুরক্ষা কর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে। হঠাৎ করে কোন বিপদ হলে তা মোকাবিলার জন্য থাকছে পাঁচ সদস্যের কুইক রেসপন্স টিম এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল। দক্ষিণেশ্বর, দমদম, বেলগাছিয়া, শ্যামবাজার, শোভাবাজার-সুতানুটি, মহাত্মা গান্ধি রোড, সেন্ট্রাল, যতীন দাস পার্ক, কালীঘাট, রবীন্দ্র সরোবর, কবি নজরুল, কবি সুভাষ, শিয়ালদহ এবং বেঙ্গল কেমিক্যাল— এই স্টেশনগুলিতে বেশি সংখ্যক রেল সুরক্ষা কর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে।
মহিলা যাত্রী এবং শিশুদের নিরাপত্তায় থাকছে মহিলা আরপিএফ টিম। বিশেষ নজরে থাকছে নোয়াপাড়া, টালিগঞ্জ, কবি সুভাষ এবং সেন্ট্রাল পার্কের মেট্রো কারশেডে। ভিড়ের সময়ে যাত্রীদের সাবধান করতে আরপিএফ কর্মীদের হাত-মাইক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। সিসি ক্যামেরায় মেট্রো স্টেশনগুলিতে নজরদারি চালানো হচ্ছে। সন্দেহজনক কোন জিনিস শনাক্ত করতে কাজে লাগানো হবে পুলিশ কুকুরকেও। পাশাপাশি মেট্রোর তরফে বারবার বিশেষ ঘোষণা করে যাত্রীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার যাবতীয় ফুটেজ রেকর্ড করে রাখা হবে বলেও জানানো হয়েছে।