নির্বাচন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলায় বিজেপি তৃনমূলের তরজা জমে উঠল। বাংলার সমস্ত বুথকে ‘সুপার সেনসিটিভ’ ঘোষণা করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে বিজেপির দাবির বিরদ্ধে গর্জে উঠলেন মমতা। তিনি বললেন , অকারণে এই দাবি তুলে বাংলার মানুষকেই অপমান করছে বিজেপি। এই রাজ্যকে নিয়ে বিজেপির এত স্প্র্শ কাতরতা কেন? দেশে যেন ‘সুপার এমার্জেন্সি’ চলছে।
মঙ্গলে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে ,বুধে প্রার্থীদের নিয়ে কালীঘাটে নিজের বাড়িতে পাঠদান শুরু করলেন মমতা। এদিন নির্বাচন কমিশনের নাম উহ্য রেখেই মমতা আক্রমণের প্রত্যক্ষ নিশানা করেন বিজেপিকে। সেইসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেন । কমিশন যেন বিজেপির দ্বারা ডেকোরেটেড না হন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন , বিজেপি যা শুরু করেছে , এরপর কোনোদিন কমিশন গিয়ে বলবে ‘আপনারা ভোটটা দিয়ে দিন’।
রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে গ্যারান্টি দিয়ে মমতা বলেন, এই রাজ্য তো শান্তিপূর্ণ রাজ্য। এরপরই তিনি কাগজ দেখিয়ে বলেন, ত্রিপুরায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি ৯৮% আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে। সেই রাজ্য নিয়ে তো কোনও কথা উঠছেনা। মমতা প্রশ্ন তোলেন , গোরক্ষার নাম করে গ্ণপিটুনিতে কতজন মারা গেছেন। চোরের মায়ের বড় গলা! আসলে বিজপি আমাকে ভয় পায়।
মমতা দাবি করেন , বাংলার সংবাদমাধ্যমকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দেওয়া হয়না। আবার মিডিয়া কন্ট্রোলের জন্য স্পেশাল অব্জার্ভার চাইছে। এটা গণতন্ত্রের লজ্জা। দিল্লিতে জাতীয় স্তরের সংবাদমাধ্যমকে ভয় দেখিয়ে কন্ট্রোল করছে । এখন বাংলাকে টার্গেট করেছে।
চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে তৃনমূল নেত্রী বলেন, ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই। এভাবে তৃনমূলকে আটকে রাখা যাবে না। এটা মাটির পার্টি । সেইসঙ্গে বিজেপিকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন ফুল নেই , ফল নেই, পাতা নেই, ছাতা নেই। শুধু বালিশ পেতে নালিশ করে যাচ্ছে। এখন ওরা এত ‘লাফিং স্টক’ হয়ে যাচ্ছে। পাঁচবছরে একটা মজবুত সরকার গঠন করতে পারলনা। সবকিছুর একটা সীমা থাকা দরকার।
এদিন মমতার প্রত্যয়ী ঘোষণা, বাংলায় সাতে সাত, বিজেপি হবে কুপোকাত।নিজের দলের প্রার্থী তালিকা নিয়ে যাতে কারও মনে কোনও সংশয় না থাকে, সেজন্য মমতা বলেন, বিয়াল্লিশে বিয়াল্লিশ পেতে ভেবেচিন্তেই প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে।
এরমধ্যে ৪১% তথা ১৭জন মহিলা প্রার্থীদের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী মমতা বলেন, শুধু লোক দেখানোর জন্য মহিলা প্রার্থী করা হয়নি। যাঁরা প্রার্থী হয়েছেন, সবাই জিতবেন। যাঁরা টিকিট পাননি, তাদের মধ্যে দু-একজনের লোভ রয়েছে। কারা তাদের ভাঙ্গিয়ে নেবে , তা নিয়ে কিছুব এসে যায় না। যারা চলে যেতে চায় , তাদের বলি , চলে যা। তাহলে আমি বেঁচে যাই। তবে আমি আমার দলের কর্মীদের একশো শতাংশ বিশ্বাস করি।
আসানসোলের প্রার্থী মুনমুন সেনকে নিয়েও যথেষ্ট আশাবাদী মমতা। এদিন বাবুল সুপ্রিয়র কটাক্ষের ট্যুইট প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ইতিমধ্যেই মুনমুনকে ভয় পেতে শুরু করেছে বিজেপি। এইজন্যই আবোলতাবোল বকছে বাবুল সুপ্রিয়।
এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অসমের বিভিন্ন কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীরাও। বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে এদিন প্রার্থীদের মনোবল চড়া সুরে বেঁধে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।