দিল্লি, ১৪ জুন– চলতি মাসেই কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির (সিডব্লুসি) নাম ঘোষণা করা হতে পারে। সেই কমিটিতে সোনিয়া ও রাহুলদের পাশাপাশি প্রিয়াঙ্কা গান্ধিরও সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তিনি কংগ্রেস সভাপতি হয়েছেন প্রায় নয় মাস হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও অ্যাডহক স্টিয়ারিং কমিটি দিয়ে কাজ চলছে। সামনে চার রাজ্যের বিধানসভার ভোট। তারপর লোকসভার নির্বাচন। তাই পূর্ণাঙ্গ কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির নাম ঘোষণার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। সভাপতি খাড়গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন নেতাদের সঙ্গে। মাঝে একদিন তিনি সোনিয়া গান্ধির বাড়ি গিয়ে এক দফা আলোচনা সেরে এসেছেন।
তবে গান্ধিদের এই পরিবার পৃষ্টপোষকতা যে বিজেপিকে ফের নতুন অস্ত্র প্রদান করবে তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আবার অনেকেই বলছেন, তিন গান্ধিই তাঁদের কাজের মধ্য দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা এখন আর পারিবারিক সূত্রে নয়, দক্ষতাতেই দলের শীর্ষ কমিটিতে স্থান পেতে পারেন। সনিয়াকে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির আজীবন সদস্য রাখার সিদ্ধান্তও একই সঙ্গে ঘোষণা করা হবে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, সিডব্লুসি-র সদস্যদের কীভাবে বাছাই করা হবে তা নিয়ে কংগ্রেসে স্পষ্ট দুটি মত আছে। দলের অন্দরে রাহুল গান্ধী সহমতের ভিত্তিতে কমিটি গড়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন।
অন্যদিকে, পি চিদম্বরমের মতো প্রবীণ নেতা চান, ভোটাভুটি করে সদস্যদের বেছে নেওয়া হোক। তবে সেই প্রস্তাব কতটা গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে সংশয় আছে। কারণ, গত বছর উদয়পুরের অধিবেশনে কংগ্রেস সিদ্ধান্ত করেছে ওয়ার্কিং কমিটিতেও কম বয়সিদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। সেটা ভোটাভুটির মাধ্যমে নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
বস্তুত ভোটাভুটি নয়, ওয়ার্কিং কমিটির সদস্যদের সভাপতির বেছে নেওয়াটাই গত আড়াই দশক যাবত রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে কংগ্রেসে। শেষবার ভোটাভুটির মাধ্যমে ওয়ার্কিং কমিটি তৈরি হয়েছিল ১৯৯৭-সালে সীতারাম কেশরি সভাপতি থাকার সময়। মাঝে সোনিয়া ও রাহুলের হাতে ছিল সভাপতির ব্যাটন। আবার নেতৃত্ব গান্ধী পরিবারের বাইরে যাওয়ায় পরিবর্তন আসে কি না সেটাই দেখার। যদিও সম্ভাবনা কম। খাড়্গে বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি গান্ধী পরিবারের ভাবনার বাইরে গিয়ে দল চালাবেন না।
কংগ্রেসের দলীয় সংবিধান সংশোধন কমিটির চেয়ারপারসন অম্বিকা সোনি গান্ধি পরিবারের তিন সদস্যকেই ওয়ার্কিং কমিটিতে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন, রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা, মুকুল ওয়াসনিক, অভিষেক মনু সিংভি, কেসি বেণুগোপাল, অজয় মাকেন, প্রমুখ। কংগ্রেস সভাপতি এবং সংসদে কংগ্রেসের দলনেতা সরাসরি সিডব্লুসি’র সদস্য হন। অর্থাৎ ভোট হলেও সংসদীয় দলনেতা সোনিয়া গান্ধিকে ভোটাভুটির মুখোমুখি হতে হবে না।এই দু’জনকে নিয়ে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য সংখ্যা ৩৫। খাড়গে সভাপতি হওয়ার আগে সংখ্যাটা ছিল ২৫। এরমধ্যে ১২জনকে সভাপতি স্বয়ং মনোনীত করেন। বাকি পদগুলির জন্য ভোটাভুটি হওয়ার কথা। অবশ্য বোঝাপড়ার ভিত্তিতে নির্বাচন ছাড়াও বাকিদের বেছে নেওয়া সম্ভব। খাড়্গে সেই পথেই হাঁটছেন। স্টিয়ারিং কমিটি আগেই সভাপতিকে সিডব্লুসির সদস্যদের বেছে নেওয়ার অধিকার দিয়ে রেখেছে।
সূত্রের খবর, নতুনদের স্থান দিয়ে বাদ যেতে পারেন, কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চন্ডি, মহারাষ্ট্রের এইচকে পাতিল, ওড়িশার ভক্তচরণ দাস, তেলেঙ্গানার দীনেশ গুন্ডুরাও প্রমুখ।