দিল্লি, ১৯ অক্টোবর– মল্লিকার্জুনের জয় নিয়ে সবাই নিশ্চিত ছিল একপ্রকার। শুধু সিলমোহর দরকার ছিল। হলও তাই। কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হলেন মল্লিকার্জুন খাড়্গে । প্রায় ২৭ বছর পর সীতারাম কেশরীর পর ফের গান্ধি পরিবারের বাইরের কেউ প্রাক্তন দলের সভাপতি হলেন।
খাড়্গেকে গান্ধি পরিবারের প্রার্থী হিসেবেই অভিহিত করেছে রাজনৈতিক মহল। অনেকের মতে, ভোটে দাঁড়ানোর পরেই খাড়্গের জয় সুনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। দেখার বিষয় ছিল, শশী তারুর কতটা লড়াই দিতে পারেন।
মল্লিকার্জুনের বিরুদ্ধে সভাপতি পদের জন্য লড়াই করেছিলেন শশী তারুর। কিন্তু ভোটের ফল ঘোষণার পর দেখা গেল, কর্নাটকের নেতার ধারে কাছে নেই তিরুঅনন্তপুরমের সাংসদ। মল্লিকার্জুন পেয়েছেন সাত হাজার ৮২৭টি ভোট। অন্যদিকে শশী পেয়েছেন মাত্র এক হাজার ৭২টি ভোট। ৪১৬টি ব্যালট বাতিল হয়েছে।
শেষবার গান্ধি পরিবারের বাইরে সভাপতি হয়েছিলেন সীতারাম কেশরী। ১৯৯৬ সালে কলকাতায় অনুষ্ঠিত সভা থেকে তিনি সভাপতি হয়েছিল। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত কেশরী ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি। তারপর দীর্ঘ সময় কংগ্রেস সভাপতি পদে ছিলেন সোনিয়া গান্ধি । ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত সোনিয়াই ছিলেন ওই পদে। ২০১৭ সালে সোনিয়ার হাত থেকে কংগ্রেসের ব্যাটন নেন ছেলে রাহুল গান্ধি। বেশ কয়েকটি রাজ্যের ভোটে রাহুলের নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস দারুণ ফল করে। কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থানের মতো রাজ্যগুলিতে বিজেপিকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসে কংগ্রেস। কিন্তু ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কংগ্রেস যে বিরাট ধাক্কা খায় তার দায়ভার নিয়ে সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল।
সেই থেকে এ পর্যন্ত সোনিয়া ফের অন্তর্বর্তী কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন। গত এক বছর ধরেই সোনিয়া শারীরিক কারণে দলের দায়িত্ব ছাড়তে চাইছিলেন। কংগ্রেসের একটা বড় অংশ চেয়েছিল রাহুল ফের দলের দায়িত্ব নিন। কিন্তু কিছুতেই তাঁকে রাজি করানো যায়নি।
প্রাথমিক ভাবে কংগ্রেস তথা গান্ধি পরিবার ঠিক করেছিল, রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে সভাপতি করা হবে। কিন্তু মরুরাজ্যে কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ সংকট যে জায়গায় পৌঁছয় তাতে গেহলটকে সভাপতির দৌড় থেকে গেহলটকে একপ্রকার সরে যেতে হয়। কারণ শচীন পাইলটের সঙ্গে রাজস্থানে গেহলট শিবিরের যে সংঘাত বেঁধেছিল তাতে প্রবীণ কংগ্রেস নেতাকে একটি পদের মায়া ত্যাগ করতেই হত। হয় রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে হত নইলে সভাপতি ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা। গেহলট দ্বিতীয়টিই বেছে নেন।