মনিপুরকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত যুবকের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিল উন্মত্ত জনতা 

ইম্ফল, ২১ জুলাই –  মণিপুরে দুই মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তা দিয়ে হাঁটানোর ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া মূল অভিযুক্তের বাড়ি  পুড়িয়ে দিল উন্মত্ত জনতা। শুক্রবার রাতে অজ্ঞাতপরিচয় কিছু ব্যক্তি প্রথমে অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। তারপর গোটা বাড়ি আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। মণিপুরে মহিলাদের নগ্ন করে হাঁটানোর ভাইরাল হওয়া ভিডিও ঘিরে ফুঁসছে দেশ। বৃহস্পতিবারই মূল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এখনো পর্যন্ত মোট চারজন এই ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপহরণ, গণধর্ষণ এবং খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। 

মনিপুরের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ৩২ বছরের হুইরেম হেরোদাস মেতেইয়ের বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল উন্মত্ত জনতা। বুধবার থৌবাল জেলা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মহিলাদের বিবস্ত্র করে হাঁটানোর সময় তিনিই নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ।উত্তেজিত জনতা যাঁরা তাঁর বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে, তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই মহিলা। মণিপুর প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত জানা যায়, এই ঘটনায় যুক্ত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত মোট চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে। যাঁরা এই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে। তদন্তের স্বার্থে এর চেয়ে বেশি কিছু বলছি না।’’ মণিপুরের এই ভয়াবহ ঘটনার পর  মুখ্যমন্ত্রী বীরেনের পদত্যাগও দাবি করেছেন অনেকে।
মণিপুরে গত ৪ মে দুই মহিলার উপর নির্যাতন চালানো হয় বলে অভিযোগ। উন্মত্ত জনতা মহিলাদের পোশাক ছিঁড়ে নেয়। নগ্ন  করে তাঁদের রাস্তায় হাঁটানো হয়। ওই মহিলাদের ধর্ষণও করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনা ঘটার প্রায় আড়াই মাস পর ভিডিও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।  তারপরেই তোলপাড় পড়ে যায় গোটা দেশে। 

গত দু’মাসের বেশি সময় ধরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে মণিপুরের পরিস্থিতি। হিংসার কারণে উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে দেড়শোর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। হিংসাদীর্ণ সেই মণিপুরেই মহিলাদের উপর এই নারকীয় অত্যাচারে গোটা দেশ ব্যথিত, ক্ষুব্ধ। মণিপুরের এই হিংসার ঘটনায় চাপের মুখে প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার প্রথমবার মুখ খোলেন ৭৮ দিন পর । এই ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার উদ্বেগ প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্টও। মনিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং বৃহস্পতিবারই অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের মতো কড়া শাস্তির দাবি জানান।