চন্ডিগড়, ১৯ জুন– গত ১০ জুন লুধিয়ানার একটি ক্যাশ ম্যানেজমেন্ট সংস্থার অফিস থেকে নগদ ৮ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে পালিয়েছিল মনদীপ কউর এবং তার স্বামী জসবিন্দর সিং। দুঃসাহসিক সেই ডাকাতির তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছিল, মনদীপ কউর যে সে ‘ডাকাত’ নয়। পাঞ্জাব জুড়ে ‘ডাকু হাসিনা’ নামে খ্যাত সে। বলা ভাল, কুখ্যাত। এই ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড ছিল সে-ই ।
এরপর মনদীপ ওরফে ডাকু হাসিনা পুরো ডাকাতির নীল নকশা তৈরি করে। নিজের ভাই এবং স্বামী সহ মোট ৯ জনকে নিয়ে দুটি দল তৈরি করে সে। তারপর ১০ তারিখ হামলা চালায় সংস্থার অফিসে। সেদিন ক্যাশ ভ্যান থেকে ৮ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা ছিনতাই করে সেখান থেকে পালিয়ে এসে উত্তরাখন্ডের চামোলিতে হেমকুণ্ড সাহিবের পথে রওনা দিয়েছিল মনদীপ কউর এবং স্বামী জসবিন্দর সিং। সেখান থেকেই তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায়, লুধিয়ানায় ডাকাতিতে সাফল্য পাওয়ার পর নেপালে পালানোর ছক কষেছেন এই ডাকাত দম্পতি। তবে দেশ ছাড়ার আগে তাঁরা কয়েকটি তীর্থস্থানে ঘুরে পুণ্য সঞ্চয় করতে চান। হেমকুণ্ড, কেদারনাথ, হরিদ্বার তাঁদের তালিকায় ছিল। লুধিয়ানার সাফল্যের পর ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাতে প্রথমেই তাঁরা হেমকুণ্ড সাহিবের গুরুদ্বারে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন।
উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার হেমকুণ্ড সাহিবে আগে থেকেই ওত পেতে ছিল পঞ্জাব পুলিশের একটি দল। সেখানে ‘ডাকু হাসিনা’কে ধরার জন্য ফাঁদ পাতা হয়েছিল। গুরুদ্বারের সামনে অনেকেই কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে যাতায়াত করছিলেন। পুলিশ সেখানে বিনামূল্যে পানীয়ের বন্দোবস্ত করে। ১০ টাকা দামের পানীয় বিনামূল্যে গুরুদ্বারে আসা পুণ্যার্থীদের দেওয়া হচ্ছিল। ডাকাত দম্পতিও পানীয় নিতে যান। তা খাওয়ার জন্য তাঁদের মুখের কাপড় সরাতে হয়েছিল। তখনই পুলিশ দম্পতিকে চিহ্নিত করে।
তবে সঙ্গে সঙ্গে মনদীপ বা তাঁর স্বামীকে ধরা হয়নি। গুরুদ্বারে প্রবেশ করে তাঁদের প্রার্থনার সুযোগ দিয়েছিল পুলিশ। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার পর ধাওয়া করে তাঁদের ধরা হয়। লুধিয়ানার ডাকাতির ঘটনায় এখনও পর্যন্ত নয় জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।