লিভ-ইন সঙ্গীর মুণ্ডচ্ছেদ, কাটা হাত-পা ফ্রিজে , গ্রেফতার অভিযুক্ত প্রৌঢ় 

হায়দরাবাদ, – ২৫ মে – আবার লিভ ইন সঙ্গীকে খুন করে  তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করার অভিযোগ। দিল্লির পর এ বার এই নৃশংস ঘটনা ঘটলো হায়দরাবাদে । ৫৫ বছর বয়সের সঙ্গিনীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হলেন ৪৮ বছরের এক প্রৌঢ়। মৃতার নাম অনুরাধা রেড্ডি। স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর গত ১৫ বছর ধরে তিনি বি চন্দ্র মোহন নামে ওই প্রেমিকের সঙ্গে তাঁর বাড়িতেই থাকতেন। মোহনের ফ্রিজ থেকে উদ্ধার হয়েছে অনুরাধার হাত এবং পা। মাথা উদ্ধার হয় মুসি নদী থেকে। প্রমাণ লোপাটের জন্য দেহের অন্যান্য অংশও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বিভিন্ন জায়গায় রাখা হয় ।

গত ১৭ মে সাফাই কর্মীদের থেকে মুসি নদীর কাছে থিগালগুদা রোডে আফজল নগর কমিউনিটি হলের উল্টোদিকে একটি ডাস্টবিন থেকে কালো প্লাস্টিকে মোড়া এক মহিলার  কাটা মাথা উদ্ধার করে পুলিশ। ওই খুনের রহস্যভেদ করতে গিয়েই আসল ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। পুলিশ জানতে পারে মোহন ‘অনলাইন ট্রেডিং’ এর কাজ করেন। অবিবাহিত ওই প্রৌঢ় ১৫ বছর ধরে অনুরাধা নামে এক মহিলার সঙ্গে থাকতেন। মহিলা সুদের কারবারি করতেন। সেখান থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। সূত্রের খবর, ব্যবসার জন্য লিভ ইন বন্ধুর কাছ থেকে ৭ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন মোহন। কিন্তু ফেরত দিচ্ছিলেন না । এই নিয়েই ঝগড়া-বিবাদ  শুরু। টাকা ফেরত দিতে না পেরে প্রেমিকাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন মোহন।

 দিল্লির শ্রদ্ধা ওয়াকার কিংবা  নিকি যাদবের খুন সভায় সমাজকে স্তব্ধ করে দিয়েছিলো। ঘটনাগুলির নৃশংসতার জের না কাটতেই ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। লিভ-ইন সঙ্গিনী অনুরাধাকে হত্যা করে তাঁর দেহ টুকরো করে কেটে কেটে ফ্রিজে রাখেন প্রেমিক। যে ভাবে শ্রদ্ধাকে হত্যা করতে ইন্টারনেটের সাহায্য নেন আফতাব, তেমন করেছেন মোহনও। পুলিশ জানায়,  হায়দরাবাদের দিলসুখনগরে মোহনের বাড়ি।  এই বাড়িতেই অনুরাধাকে  খুন করা  হয় গত ১২ মে। ওই দিন দু’জনের মধ্যে প্রচণ্ড ঝামেলা হয়। সেই সময় অনুরাধার বুকে ছুরি বসিয়ে দেন মোহন। পেটেও ছুরি চালান। কিছু ক্ষণের মধ্যেই  মৃত্যু হয় অনুরাধার। এর পর প্রেমিকার দেহ টুকরো টুকরো করে কাটেন মোহন। পাথর কাটার মেশিন কিনে এনেছিলেন আগেই । তাই দিয়ে মাথা কাটার পর সেটি নিয়ে অটোয় চড়ে মুসি নদীর ধারে যান অভিযুক্ত। নদীতে কাটা মাথা ছুড়ে ফেলে আবার ঘরে ফেরেন। এর পর  সঙ্গিনীর হাত-পা কেটে একটি প্লাস্টিকে ঢেকে ঢুকিয়ে দেন ফ্রিজে। যাতে দুর্গন্ধ না বেরোয়, তার জন্য গোটা বাড়িতে প্রচুর সুগন্ধি ছড়ান। কী ভাবে দেহ নষ্ট করে ফেলা যায় তার জন্য গত কয়েক দিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়ার সাহায্য নিতেন মোহন।


অনুরাধা জীবিত রয়েছেন বোঝাতে শ্রদ্ধা ওয়াকারের মতো অনুরাধারও মোবাইল ফোন নিয়ে তাঁর পরিচিতদের তাঁর মতো করে মেসেজ করতেন অভিযুক্ত মোহন। কিন্তু তাও  শেষরক্ষা হল না। ঘটনার তদন্তে নেমে ওই বাড়ি এবং এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ।  জেরার মুখে নিজের অপরাধের কথা স্বীকার করে নেন অভিযুক্ত। ধৃতের বিরুদ্ধে খুন-সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।