কলকাতা, ২৭ সেপ্টেম্বর – চলচ্চিত্র গুণগ্রাহীরা কমবেশি সকলেই সৌম্যেন্দু রায় নামটির সঙ্গে পরিচিত। সত্যজিৎ রায়ের চিত্রনাট্যকার সৌম্যেন্দু রায় সেলুলয়েড দুনিয়ায় এক কিংবদন্তি। বুধবার বালিগঞ্জে নিজের বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। গত কয়েক মাস ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। বুধবার নিজের বাসভবনেই প্রয়াণ ঘটে তাঁর। সৌমেন্দুর মৃত্যুতে শিল্পীমহলে শোকের ছায়া নেমে আসে।
১৯৫৪ সালে সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গে প্রথম পরিচয় সৌমেন্দু রায়ের। সত্যজিতের প্রথম ছবি ‘পথের পাঁচালী’তে সুব্রত মিত্রের সহকারী হিসবে কাজ করেছিলেন সৌমেন্দু। ১৯৬১ সালে স্বাধীনভাবে সত্যজিত রায়ের সঙ্গে কাজ শুরু করেন তিনি। পূর্ণ দৈর্ঘ্যের ছবি ‘তিনকন্যা’-র চিত্রনাট্যকার তিনি। সত্যজিত রায়ের সঙ্গে মোট ২১ টি ছবি করেছিলেন সৌমেন্দুবাবু। তৈরি করেছেন শর্ট ফিল্ম এবং তথ্যচিত্রও। সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালী’ ছবির ক্যামেরা কেয়ারটেকার হিসাবে ইউনিটে যোগদান করার পর দুজনের নিবিড় বন্ধন স্থায়ী হয় ১৯৯২ সালে সত্যজিতের প্রয়াণ পর্যন্ত । ‘তিন কন্যা’ ছাড়াও সত্যজিৎ রায়ের ‘অভিযান’, ‘চিড়িয়াখানা’, ‘গুপী গায়েন বাঘা বায়েন’, ‘অরণ্যের দিনরাত্রি’র মতো ছবিতে ক্যামেরার দায়িত্ব সামলেছেন সৌম্যেন্দু । ‘সোনার কেল্লা’, ‘শতরঞ্জ কি খিলাড়ি’তেও তাঁর ক্যামেরার কাজে আজও মুগ্ধ দর্শক মহল । জাতীয় পুরস্কার-সহ দেশ বিদেশের একাধিক সম্মান পেয়েছেন এই শিল্পী।
কেবল সত্যজিৎ রায় নন, তপন সিনহা, তরুণ মজুমদার, বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর মতো পরিচালকের সঙ্গেও কাজ করেছেন সৌম্যেন্দু রায়। রূপকলা কেন্দ্রের সিনেম্যাটোগ্রাফি বিভাগের প্রধান ছিলেন সৌমেন্দু রায়। তাঁর ছাত্র সংখ্যা অগুনতি। ২০০০ সাল থেকে ক্যামেরার কাজ আর করেননি। সৌম্যেন্দু রায়ের প্রয়াণে টলিপাড়াতেওঁ নেমে আসে শোকের ছায়া । সূত্রের খবর, বুধবার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় ।