• facebook
  • twitter
Saturday, 23 November, 2024

প্রয়াত চিকিত্সাবিজ্ঞানে ভারতে ল্যাপারোস্কোপির জনক

কলকাতা,৯ জানুয়ারী — দীর্ঘক্ষণ যন্ত্রণাদায়ক কাটা চেরা করে হতো অপারেশন। যার খরচ ছিল বিপুল ব্যায় সাধ্য। শরীরের অনেকটা অংশ কেটে অস্ত্রোপচার হওয়ায় সেরে উঠতেও সময় লাগে বেশ কিছু দিন। শরীর থেকে বের হয়ে যেতঅনেকটা রক্ত ।হাসপাতালে থাকতে হতো বেশ কিছুদিন।তাই খরচ ও বাড়তো বেড ভাড়ার। অস্ত্রোপচার দিয়ে এই ধারণাটাই ছিল এতদিন। কিন্তু এখন বদলেছে আদ্যিকালের মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গিও।

কলকাতা,৯ জানুয়ারী — দীর্ঘক্ষণ যন্ত্রণাদায়ক কাটা চেরা করে হতো অপারেশন। যার খরচ ছিল বিপুল ব্যায় সাধ্য। শরীরের অনেকটা অংশ কেটে অস্ত্রোপচার হওয়ায় সেরে উঠতেও সময় লাগে বেশ কিছু দিন। শরীর থেকে বের হয়ে যেতঅনেকটা রক্ত ।হাসপাতালে থাকতে হতো বেশ কিছুদিন।তাই খরচ ও বাড়তো বেড ভাড়ার। অস্ত্রোপচার দিয়ে এই ধারণাটাই ছিল এতদিন। কিন্তু এখন বদলেছে আদ্যিকালের মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গিও। অপারেশন মানেই লম্বা ছুটি, যন্ত্রণা, দুর্ভোগ। এক সময় এমন ব্যাপার হলেও পরিস্থিতি এখন অন্যরকম। আধুনিক ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারিতে যন্ত্রণা কম, সেরে উঠতেও কম দিন লাগে। ডিজিটাল সময়ে এমন অত্যাধুনিক অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি দেশে চালু করেছিলেন এই ডাক্তারবাবু  ডা. তেহামটন ইরাক উদওয়াদিয়া। বদলে দিয়েছিলেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রাচীন ধ্যান-ধারণাকে। সেই ডাক্তারবাবু ৮৮ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন ।

পুরাতন চিকিত্সাব্যবস্থা থেকে যিনি মুক্তি দিয়েছিলেন মানুষকে এবং  চিকিৎসাবিজ্ঞানে বিপ্লব এনেছিলেন তিনি  ডা. তেহামটন ইরাক উদওয়াদিয়া। ভারতে ল্যাপারোস্কোপি সার্জারির জনক তিনিই। বাইকুল্লার জেজে হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন। মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতাল এবং হিন্দুজা হাসপাতালের প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন। ইন্ডিয়ান অ্য়াসোসিয়েশন অব গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল এন্ডো-সার্জনের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্টও ছিলেন তিনিই। দীর্ঘ সময় ধরেই শারীরিক নানা সমস্যা ভুগছিলেন ডাক্তারবাবু। ব্রিচ ক্যান্ডিতেই চিকিৎসা চলছিল তাঁর। ৮৮ বছরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

পার্সি পরিবারে জন্ম। ডাক্তারির পড়াশোনা মুম্বইতে। উচ্চশিক্ষা বিদেশে। ইংল্যান্ডের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনসে অধ্যাপনার কাজ করেছেন বহু বছর। তাঁর হাত ধরেই ভারতে আধুনিক ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারির প্রচলন হয়েছে। 

হার্টের অস্ত্রোপচার থেকে কিডনি, মূত্রথলি, ক্যানসার–যে কোনও রোগের সার্জারি এখন ল্যাপারোস্কোপিতে করছেন ডাক্তাররা। কোলন, মলদ্বার, পাকস্থলী, খাদ্যনালী প্রভৃতি ক্যানসারে ল্যাপারোস্কোপিক পদ্ধতিতে সার্জারিগুলি হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সাফল্যের হার খুবই ভাল। এমনকি বন্ধ্যত্বের যে কোনও অস্ত্রোপচারও ল্যাপারোস্কোপিতে হওয়া সম্ভব। পেটে আর ছুরি চালানোর দরকার নেই। ফালা ফালা করে কাটতেও হয় না। অপারেশনের নাম ‘কি-হোল’ এন্ডোস্কোপিক সার্জারি। একে ‘মিনিমাল ইনভেসিভ সার্জারি’ও বলে। এটাও একধরনের ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারি। শরীরে ০.৫-১.৫ সেন্টিমিটার ব্যাসের ছোট ছিদ্র করে তার মধ্যে দিয়ে ক্যামেরা ও সার্জারির সরঞ্জাম ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। ঠিক কোন জায়গায় সমস্যা রয়েছে তা নিখুঁতভাবে চিহ্নিত করে অস্ত্রোপচারের পুরো ম্যাপ তৈরি করে ফেলেন ডাক্তাররা। শুধু রোগগ্রস্থ অংশেই সার্জারি হয়। আশপাশের সুস্থ কোষ ক্ষতিগ্রস্থ হয় না।