ডাবলিন, ২৪ নভেম্বর – স্কুলের ঠিক বাইরেই পড়ুয়াদের উপরে ছুরি নিয়ে আক্রমণ করে এক দুষ্কৃতী। আক্রমণের জেরে তিন শিশু-সহ আহত হন পাঁচজন।এর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন। উন্মত্ত জনতা আগুন ধরিয়ে দেয় পুলিশের গাড়িতেও। লুটপাট চালানো হয় বেশ কিছু দোকানে, জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাস-গাড়ি। প্রাথমিকভাবে অনুমান, শরণার্থী হিসাবে আসা এক ব্যক্তিই শিশুদের উপর হামলা চালায়। বিক্ষোভকারীদের দাবি, উদ্বাস্তুদের আয়ারল্যান্ড থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টা নাগাদ। ডাবলিনের পার্নেল স্কোয়ারে একটি স্কুলের বাইরে শিশু ছাড়াও বেশ কয়েকজনের উপর ছুরি নিয়ে আচমকাই আক্রমণ চালায় এক ব্যক্তি। গুরুতর আহত হয় পাঁচ বছরের এক নাবালিকা। এছাড়াও আহত হয় পাঁচ বছরের একটি ছেলে এবং ছয় বছরের একটি মেয়ে। আহত হন এক যুবতীও। জনসাধারণই ওই হামলাকারীকে নিরস্ত্র করে। সেই সময় আহত হয় হামলাকারীও। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই আততায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে ৫০ বছর বয়সি হামলাকারী আসলে শরণার্থী হিসাবে আয়ারল্যান্ডে এসেছিল। তার পরেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে দেশের রাজধানী। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরও ছোড়েন বিক্ষোভকারীরা। দোকানেও লুটপাট চালানো হয়।পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
হিংসা রোধে ঘটনাস্থলে প্রায় ৪০০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরপর পুলিশের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়ায় বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের একটি গাড়িও পুড়িয়ে দেওয়া ছাড়াও পুলিশকে লক্ষ্য করে কাচের বোতল, পাথর, এমনকি আতশবাজি ছুড়তে শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। প্রায় তিন ঘণ্টা পর, স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। তবে, তারপরও উত্তেজনা কমেনি। বন্ধ রাখা হয়েছে ও’কনেল স্ট্রিটের যান চলাচল। সেখানে অবস্থিত একটি হাসপাতালেও মানুষকে না আসার পরামর্শ দিয়েছে আইরিশ পুলিশ।
ডাবলিনের মতো শান্ত শহরে এমন বিক্ষোভ বরদাস্ত করা হবে না বলে বার্তা দিয়েছেন আইরিশ বিচারমন্ত্রী হেলেন ম্যাকএনটি। হামলাকারীদের আটক করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। স্থানীয় পুলিশ কমিশনার ড্রিউ হ্যারিস বলেন, অতি দক্ষিণপন্থীদের মদতে সাধারণ মানুষ লাগামছাড়া হয়ে যাচ্ছে। শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেওয়া হয়েছে ডাবলিনবাসীকে।