দিল্লি, ৫ জুন– তিনি অন্যদের মত রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি না করলেও তবে বালেশ্বরের দুর্ঘটনা নিয়ে তীব্র খোঁচা জানাতে ভোলেননি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে। সোমবার সকালে লেখা সেই চিঠিতে তিনি দুর্ঘটনার দায় নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রীকে।
শুধু দুর্ঘটনা নয় খাড়গে প্রশ্ন তুলেছেন রেলের বিপুল শূন্যপদ নিয়েও। তাঁর হিসাব প্রায় তিন লাখ পদ খালি পড়ে আছে। এমনকী শীর্ষস্তরের গুরুত্বপূর্ণ পদও ফাঁকা যেগুলি পূরণ করার দায় প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে কংগ্রেস সভাপতির প্রশ্ন, এত পদ কেন শূন্য? নয় বছরে সরকার তবে কী করল?
কংগ্রেস সভাপতি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, সরকার নজিরবিহীন এই দুর্ঘটনার দায় স্বীকার করুক। এত বড় দুর্ঘটনা, এতগুলি প্রাণ চলে যাওয়ার দায় নিতেই হবে সরকারকে। তবে আশ্চর্যের হল, চিঠিতে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণর সমাালোচনা করলেও খাড়্গে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেননি। আমেরিকা সফররত রাহুল গান্ধী যদিও রেলমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে সরব হন গত শনিবারই। বিদেশে বসেই তিনি ওড়িশার রেল দুর্ঘটনা নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে অতীতে কংগ্রেস সরকারের প্রসঙ্গ টেনে বর্তমান রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন। বলেন, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী একটি রেল দুর্ঘটনার পর কেউ দাবি করার আগেই পদত্যাগ করেছিলেন। কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক রণদীপ সিং সুরজেওয়ালাও পদত্যাগ চেয়েছেন রেলমন্ত্রীর। কিন্তু কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে বস্তুত সরকারের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করলেও অশ্বিনী বৈষ্ণর পদত্যাগ চাননি।
খাড়গে দুর্ঘটনা পরবর্তী সরকারি পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এই প্রসঙ্গেই কংগ্রেস সভাপতি রেলমন্ত্রী বৈষ্ণকে নিশানা করে চিঠিতে প্রশ্ন তুলেছেন, ‘কেন তিনি সিবিআই তদন্ত চাইলেন? রেল দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান সিবিআই কীভাবে করবে?’ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘সিবিআই অপরাধের তদন্ত করতে পারে। কিন্তু রেল দুর্ঘটনা সম্পূর্ণভাবে একটি কারিগরি বিষয়।’ খাড়্গের ইঙ্গিত দুর্ঘটনার আসল কারণ আড়াল করতেই রেলমন্ত্রী সিবিআই তদন্ত চেয়েছেন।
কংগ্রেস সভাপতি রেল নিয়ে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেলের রিপোর্ট উদ্ধৃত করে বলেছেন, ২০১৭-’১৮ থেকে ২০২০-’২১-র মধ্যে চারটি দুর্ঘটনার তিনটিই ছিল ডিরেলমেন্ট অর্থাৎ লাইন থেকে বগি পড়ে যাওয়া। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে খাড়্গের বক্তব্য, সিএজির রিপোর্টের এই বক্তব্য ছিল রেলের জন্য বিপদ বা লাল সংকেত যা আপনারা উপেক্ষা করেছেন।