সমস্ত হুক্কা বারে তালা, ২১ বছরের আগে সিগারেট টানলেই সাজা কর্নাটকে 

বেঙ্গালুরু: গুড়গুড় করে হুক্কার শব্দ শেষ। কর্নাটক সরকার তার রাজ্যে সমস্ত হুকা বারে তালা লাগাচ্ছে । শুধু হুক্কা নয় তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য সেবন করার জন্য বেঁধে দেওয়া হচ্ছে ন্যূনতম বয়সও। রাজ্য সরকারের নয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২১ বছর বয়স না হলে তামাকজাত দ্রব্য কেনাই যাবে না। কমবয়সিদের হুক্কা, সিগারেট বা তামাকজাত দ্রব্যের নেশা করতে দেখলেই কড়া আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কর্নাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাও এবং ক্রীড়া ও যুব পরিষেবা মন্ত্রী বি নগেন্দ্র ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের সিগারেট ও অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য আইন শীঘ্রই সংশোধন করা হবে। মন্দির ও স্কুল ছাড়াও হাসপাতালের কাছে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা হবে। তরুণ-তরুণীরা হুক্কা বারের প্রতি ভীষণভাবে আকর্ষিত হচ্ছে। কমবয়সিদের মধ্যে তামাকের নেশাও বাড়ছে। তাই কমবয়সিদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবেই রাজ্যের সমস্ত হুক্কা বার বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্য কেনার বয়সসীমাও বাড়ানো হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আজকাল এত বেশি সিগারেট ও হুক্কায় আসক্তি হয়ে পড়ছে নতুন প্রজন্ম যে ফুসফুসের ক্যানসার কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হার্টের রোগ। কমবয়সিদের মধ্যেও হার্টের রোগের ঝুঁকি অনেক বেড়েছে। আর সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত কর্ণাটক সরকারের।


সিগারেটের ধোঁয়ায় থাকে নিকোটিন যা ফুসফুসের জন্য বিষ। হুক্কার ধোঁয়া তৈরি হচ্ছে চারকোল থেকে। এর সঙ্গেই মিশছে তামাক। দুয়ে মিলে বিষাক্ত টক্সিন ঢুকছে ফুসফুসে। ফলে শ্বাসনালী ও ফুসফুসের ক্ষতি অনেক বেশি হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটা আস্ত সিগারেট খেতে কম করেও ২০ বার টান দিতে হয়, হুক্কায় অন্তত ২০০ বা তার বেশি টান দিতে হয়। প্রতি টানে বিষাক্ত টক্সিন ঢোকে শরীরে। একটা হুকা শেষ করা মানে পাহাড়প্রমাণ বিষ ঢোকে শরীরে। সিগারেটের ধোঁয়ার থেকে আড়াই গুণ বেশি নিকোটিনও ঢোকে শরীরে।

ই-সিগারেটের মতোই আজকাল ই-হুক্কার বা ইলেকট্রিক হিট হুক্কার বাড়বাড়ন্ত। ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটা ই-সিগারেটে যতটা নিকোটিন ঢুকবে ফুসফুসে, ই-চারকোল পুড়লে ফুসফুসের ৮০ শতাংশই ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

ক্যানসার চিকিৎসকেরা বলছেন, হুক্কাখোরারে সিগারেটখোরদের চেয়ে অনেক বেশি সময় এবং জোরে ধোঁয়া টানেন। তার ফলে ধোঁয়া অনেক বেশি পরিমাণে শরীরে ঢোকে। এক ঘণ্টা ধরে হুক্কা খেলে তা ১০০টি সিগারেট খাওয়ার সমান হয়। এ ছাড়া, একই পাইপ একাধিক লোকের মুখে ঘোরার ফলে সংক্রামক ব্যাধি ছড়ানোর আশঙ্কাও থাকে।অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সায়ানাইড, ফরম্যালডিহাইডের মতো রাসায়নিকও থাকে হুকায়।