তিন সদস্য বিশিষ্ট সুপ্রিম কোর্টের নিজস্ব তদন্তকারী প্যানেল থেকে বৃহস্পতিবার বিচারপতি এন ভি রামান্না নিজেকে সরিয়ে নিলেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শীর্ষ আদালত নিজেদের এক তদন্ত প্যানেল গড়েছিল। সেই প্যানেলের অন্যতম সদস্য ছিলেন বিচারপতি রামান্না।
সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন এক মহিলা কর্মী প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন, তিনিই আবার সুপ্রিম কোর্টের এই তদন্ত প্যানেলের কাছে অভিযোগ জানান যে, বিচারপতি রামান্না যেহেতু অভিযুক্ত প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের পারিবারিক বন্ধু, তাই তদন্ত প্যানেলে বিচারপতি রামান্নাকে অন্তর্ভুক্ত করায় আমার আপত্তি আছে। যে প্যানেল প্রধান বিচারপতি গগৈয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করবে তার নেতৃত্বে রয়েছেন বিচারপতি এস এ ববডে।
যে মহিলা যৌন নিগ্রহের অভিযোগ এনেছেন, তাঁর শুক্রবার প্যানেলের সামনে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে। সেই মহিলা বিচারপতি ববডেকে লেখা একটি চিঠিতে বলেছেন সুপ্রিম কোর্ট তদন্তের জন্য যে প্যানেল ঠিক করেছে, তাতে রয়েছেন মাত্র একজন মহিলা বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়, যা বিশাখা গাইডলাইন্সের পরিপন্থী।
অভিযোগকারী মহিলা আরও লিখেছেন যে, আমার শঙ্কা হয় আমি যে হলফনামা জমা দিয়েছি এবং যে তথ্য পেশ করেছি, তার নিরপেক্ষ শুনানি নাও হতে পারে। এরই ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে বিচারপতি এন ভি রামান্না নিজেকে প্যানেল থেকে সরিয়ে নিলেন। তিনি ছাড়াও প্যানেলের আরও দু’জন সদস্য হলেন বিচারপতি এস এ ববাডে এবং বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এরই মধ্যে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পট্টনায়ককে দিল্লিস্থিত এক আইনজীবী উৎসব বাইনসের অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত করেছে। দিল্লির সেই আইনজীবীর অভিযোগ হল যৌন হেনস্থার গোটা ঘটনায় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে এক যড়যন্ত্র।
বিচারপতি গগৈও নিজে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যৌন হেনস্থার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আগেই বলেছেন, দেশের কোনও বড় শক্তি চাইছে প্রধান বিচারপতির পদকে অকেজো করে রাখতে। আইনজীবী উৎসব বাইনস তাঁর হলফনামায় জানিয়েছিলেন, বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ একটি বড় ষড়যন্ত্র এবং তার সঠিক তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।
আইনজীবীর অভিযোগ এখন খতিয়ে দেখবেন বিচারপতি পট্টনায়ক। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন মহিলা কর্মী গত সপ্তাহে একাধিক বিচারপতির কাছে তার হলফনামা পাঠিয়ে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন।