‘মাই লর্ড’ থামাতে আইনজীবীকে অর্ধেক বেতন দিতে চাইলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি

দিল্লি, ৩ নভেম্বর– শব্দটির ব্যবহার সেই ইংরেজ আমল থেকে৷ শব্দটি হল ‘মাই লর্ড’৷ তবে অনেকের কাছেই এটি দাসত্বের ইঙ্গিতবাহী৷ ব্যবহার হয় কোর্ট চত্বরেই৷ যদিও মাই লর্ডের পরিবর্তে অনেক আদালতে ‘স্যার’ বা ‘ইওর অনার’ ব্যবহার করা হয়৷ কিন্ত এই ‘মাই লর্ড’ শব্দ যে এতটা বিরক্তিকর হতে পারে যার যেরে নিজের অর্ধেক বেতন পর্যন্ত দিতে রাজী হয়ে যাবেন বিচারপতি তা কিন্তু বেশ আশ্চর্যের৷
ঘটনাটি সুপ্রিম কোর্টের৷ একটি মামলায় সওয়াল করতে গিয়ে বার বার ‘মাই লর্ড’, ‘ইয়োর লর্ডশিপ’ এতবার বলে ফেলেন আইনজীবী যে তাতেই বিরক্ত হয়ে যান সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পি এস নরসীমা৷ এমনকী এতটাই অসন্ত্তষ্ট হন যে ‘মাই লর্ড’ বলা বন্ধ করলে আইনজীবীকে অর্ধেক বেতন দেওয়ার কথা বলেন তিনি৷
আসলে আইন হোক কিংবা বিচার ব্যবস্থর বিভিন্ন রীতিনীতি, সব কিছুতেই এখনও বৃটিশ আমলের প্রভাব রয়েছে৷ যার অন্যতম হল, আদালত কক্ষে ‘মাই লর্ড’ বা ‘ইওর লর্ডশিপ’ বলে সম্বোধন করা৷ যদিও পরে এই অলিখিত নিয়ম প্রায় শিথিল হয়ে যায়৷ কিন্ত্ত অনেক আইনজীবীই এখনও  এই সম্বোধন করে থাকেন৷
গত বুধবার শীর্ষ আদালতে বিচারপতি পিএস নরসিংহ এবং বিচারপতি এএস বোপান্নার ডিভিশন বেঞ্চে একটি মামলার শুনানি চলছিল৷ সংশ্লিষ্ট মামলাতেই এক প্রবীণ আইনজীবী বিচারপতি নরসিংহকে বার বার ‘মাই লর্ড’ বলে সম্বোধন করছিলেন৷ তাতেই বিরক্ত হয়ে যান বিচারপতি৷ আইনজীবীকে তিনি বলেন, ‘আর কত বার আপনি আমাকে ‘মাই লর্ড’ বলবেন? আপনি যদি এটা বলা বন্ধ করেন, তবে আমি আপনাকে আমার অর্ধেক বেতন দিয়ে দেব৷’ শুধু তাই নয়, কেন তাঁকে ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করা হচ্ছে না, এদিন সেই প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি৷
উল্লেখ্য  ২০০৬ সালে, ‘বার কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’র পক্ষ থেকে প্রস্তাব পাশ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, বিচারকদের কোনও উকিল আর ‘মাই লর্ড’ এবং ‘ইয়োর লর্ডশিপ’ বলে সম্বোধন করবেন না৷ তার পরিবর্তে ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করা হবে স্থির হয়েছিল৷ যদিও তারপরেও সেই সিদ্ধান্ত খাতায়-কলমে থেকে গিয়েছে৷ আদালতকক্ষে বিচারক কিংবা বিচারপতিকে সম্বোধনের পুরনো প্রথা এখনও মেনে চলেন অনেকেই৷