টোকিও, ১৪ ডিসেম্বর– অর্থনীতি-প্রযুক্তি সবেতেই অনেক উন্নত জাপান। কিন্তু এই উন্নতিতেও মাথায় হাত জাপান সরকারের। জন্মহার সাঙ্ঘাতিকভাবে কমছে দেশে। এবারে জনসংখ্যায় সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিয়েটাই যে প্রধান সমস্যা। তার থেকেও বড় সমস্যা সন্তান ধারণে অনীহা। বিয়েতে বেজায় নিমরাজি জাপানের মেয়েরা। শুধু মেয়েদের দোষ দিয়ে লাভ নেই, পুরুষরাও নাকি এখন বিয়ে করতে নারাজ। পরিবার পরিকল্পনার ইচ্ছাই নাকি নেই। এমনটাই ধরা পড়েছে সমীক্ষায়। তাই জাপান সরকারের চিন্তার শেষ নেই।
তবে জনগণকে নানা উত্সাহিত-প্রলোভন দিয়েও কোন লাভ হচ্ছে না, এমনটাই দাবি জাপানের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। সে জন্য সরকার থেকে লাখ লাখ টাকা খরচও করা হচ্ছে। সন্তান নিতে উৎসাহ দিতে অতিরিক্ত ৪৮ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেছে সরকার । যাঁরা বাবা-মা হবেন তাঁদের বছরে প্রায় ৫ লাখ ইয়েনও (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩ লাখ টাকা ) দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে সরকারি তরফে।
জাপানের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের গণনা বলছে, ২০২১-এ সে দেশের জন্মহার আট লক্ষ পাঁচ হাজার। ২০২০-তে সে দেশে জন্মহার ছিল আট লক্ষ ৪০ হাজার ৭৩২, যা কি না ২০১৯-র চেয়ে ২.৮ শতাংশ কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, আগের তুলনায় করোনাকালে জাপানে বিয়ের সংখ্যা কমেছে। জন্মহার আরও হ্রাস পেতে থাকবে, যদি না যুবসমাজ বিয়ে করতে রাজি হয়।
সমীক্ষা বলছে, ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সি ১৭.৩ শতাংশ পুরুষ এবং ১৪.৬ শতাংশ মহিলা বলছেন যে, তাঁদের বিয়ে করার কোনও ইচ্ছে নেই। সমীক্ষার ফলাফল ভাবনায় ফেলেছে জাপান সরকারকে। কেন বিয়ে করতে রাজি নয় জাপানের ছেলেমেয়েরা তার কিছু কারণ রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, স্বাধীনভাবে বাঁচতেই বেশি আগ্রহী জাপানের তরুণ প্রজন্ম। পুরুষরা তাঁদের চাকরির নিরাপত্তা নিয়ে বেশ চিন্তিত। বিয়ের পর পরিবারের দায়িত্ব নিতে চাইছেন না অনেকেই। অন্য দিকে অবিবাহিত মেয়েরা কর্মজীবনের প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। সন্তানের জন্ম দিলে চাকরি বা পেশার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে বলেই মনে করছেন তাঁরা।
শুধু জাপানই নয়, বিগত কয়েক বছরে একই ভাবে চিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার জন্মহারও কমেছে। সরকার টাকাপয়সা দিয়েও কিছুতেই বিয়েতে রাজি করাতে পারছে না।