• facebook
  • twitter
Thursday, 19 September, 2024

অনাস্থায় না জগন্মোহনের, উৎখাত চাওয়া মোদিতেই আস্থা ওয়াইএসআরের কংগ্রেসের

দিল্লি, ২৮ জুলাই– নতুন সমীকরণে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডির দল ওয়াইএসআরের। শুক্রবার নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়ে জগন্মোহন পরিষ্কার করে দিলেন তিনি বিরোধী জোটে নেই। আর এই সিদ্ধান্তেই অবাক রাজনীতিক বিশেষজ্ঞারাও। কারণ সম্প্রতি জগন্মোহনকে হারাতে তেলুগু চিত্রতারকা পবন কল্যাণের দল জনসেনার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিজেপি। আলোচনা

জগনমােহন রেড্ডি (File Photo: IANS)

দিল্লি, ২৮ জুলাই– নতুন সমীকরণে অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডির দল ওয়াইএসআরের। শুক্রবার নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে লোকসভায় বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেওয়ায় সিদ্ধান্ত নিয়ে জগন্মোহন পরিষ্কার করে দিলেন তিনি বিরোধী জোটে নেই। আর এই সিদ্ধান্তেই অবাক রাজনীতিক বিশেষজ্ঞারাও। কারণ সম্প্রতি জগন্মোহনকে হারাতে তেলুগু চিত্রতারকা পবন কল্যাণের দল জনসেনার সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বিজেপি। আলোচনা চালাচ্ছে তেলুগু দেশম পার্টির প্রধান চন্দ্রবাবু নায়ডুর সঙ্গেও। তবুও অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডির দল ওয়াইএসআর পাশে দাঁড়াল বিজেপির। জগনের দলের সংসদীয় নেতা বিজয়সাই রেড্ডি শুক্রবার তাঁদের এই অবস্থানের কথা জানিয়েছেন।

দিল্লির আমলাদের ‘রাশ’ হাতে রাখার জন্য বৃহস্পতিবার মোদি সরকারের বিতর্কিত বিল সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওয়াইএসআর কংগ্রেস়। জগনের দলের ন’জন রাজ্যসভা সাংসদের সেই গুরুত্বপূর্ণ সমর্থনের জোরে সেই বিল পাশ করা বিজেপির পক্ষে অনেক সহজ হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। তবে বিরোধীরা অনাস্থা প্রস্তাব আনলেও মোদি সরকারের পতনের বিন্দুমাত্র সম্ভাবনা নেই। কারণ, ৫৪৩ সাংসদের লোকসভায় সরকারের পতন ঘটনার জন্য প্রয়োজন ২৭২ সাংসদের সমর্থন। বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সাংসদ সংখ্যা ৩৩২। বস্তুত, এ ক্ষেত্রে ওয়াইএসআর কংগ্রেসের ২২ জন সাংসদের সমর্থনের দরকার নেই মোদির।

লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা এখনও দিনক্ষণ ঘোষণা করেননি। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনে কংগ্রেস এবং ভারত রাষ্ট্র সমিতির তরফে জমা দেওয়া দু’টি নোটিস গ্রহণ করে বুঝিয়ে দিয়েছেন, চলতি বাদল অধিবেশনেই সংসদের নিম্নকক্ষে শক্তিপরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে। সংসদীয় বিধি অনুযায়ী লোকসভার স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস গ্রহণ করার ১০ দিনের মধ্যেই তা নিয়ে সংসদে বিতর্কের সূচনা হওয়ার কথা। এ বিষয়ে দিন নির্ধারণের ক্ষমতা একমাত্র স্পিকারের।

উল্লেখ্য, ইতিহাস বলছে, স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে এই নিয়ে ২৮তম অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে সংসদে আলোচনা হতে চলেছে। অতীতে দেশের তিন প্রধানমন্ত্রী, মোরারজি দেশাই, ভিপি সিংহ এবং অটলবিহারী বাজপেয়ী বিরোধীদের আনা এমন অনাস্থা প্রস্তাবেই গদি হারিয়েছিলেন। ১৯৬৩ সালে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম অনাস্থা প্রস্তাবটি এনেছিলেন জেবি কৃপালণী। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরসিংহ রাওয়ের পর মোদীই দু’টি অনাস্থা জয়ের নজির তৈরি করবেন। বিরোধী দলগুলির অবশ্য বক্তব্য, মণিপুর নিয়ে সরকারের ‘নীরবতা’ ভাঙাতেই তারা সংসদে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে।

বুধবার বিরোধী দলগুলির জোট ‘ইন্ডিয়া’র হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন কংগ্রেস সাংসদ গৌরব গগৈ। বিআরএসের হয়ে অনাস্থা প্রস্তাবের নোটিস জমা দেন সাংসদ নামা নাগেশ্বর রাও। উল্লেখ্য যে, তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দল বিআরএস ২৬টি বিরোধী দলের জোট ‘ইন্ডিয়া’র শরিক নয়। তবে সাম্প্রতিক অতীতে বহু বার বিজেপির বিরোধিতায় সরব হতে দেখা গিয়েছে তাদের।

গত ন’বছরে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এই নিয়ে দ্বিতীয় বার অনাস্থা প্রস্তাবের মুখোমুখি হলেন মোদি। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে সংসদের বাদল অধিবেশনেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিল চন্দ্রবাবু নায়ডুর তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)। সেই প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছিল কংগ্রেস-সহ কয়েকটি বিজেপি-বিরোধী দল। বিজেপির সংখ্যাধিক্যের জোরে বিরোধীদের আনা প্রস্তাব খারিজ হয়ে গিয়েছিল। এ বার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দ্বিতীয় অনাস্থা জিতে নরসিংহ রাওয়ের নজির স্পর্শ করতে চলেছেন মোদি।