গাজা, ১ ডিসেম্বর – সাত দিনের যুদ্ধবিরতি। আবার ইজরায়েলি সেনা ভয়ঙ্কর বোমাবর্ষণ শুরু করল গাজায়। ইজরায়েলের অভিযোগ, হামাসের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করা হয়েছে। ইজরায়েলকে লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করা হয়েছে। যুদ্ধবিরতির সমঝোতা ভঙ্গ করায় এই পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দাবি। শুক্রবার,১ ডিসেম্বর ইজরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, তারা ফের গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় যুদ্ধবিরতি শেষ হয়। এর এক ঘণ্টা আগেই ইজরায়েল জানায়, গাজা থেকে ইজরায়েলকে লক্ষ্য করে একটি রকেট ছোড়া হয়েছিল। তা মাটিতে পড়ার আগেই তা প্রতিহত করে ইজরায়েলি বাহিনী। এদিন সকাল থেকে, সীমান্তবর্তী ইজরায়েলি শহরগুলিতে ফের সতর্কতামূলক সাইরেন বাজছে। অন্যদিকে, প্যালেস্তিনিয় সংবাদমাধ্যমগুলি জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গাজা ভূখণ্ড জুড়ে ইজরায়েলি বিমান ও কামান হামলা চালানো শুরু হয়েছে। হামাসের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করা হয়নি বা হামলার দায় স্বীকার করা হয়নি। তবে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক এবং সংলগ্ন পূর্ব জেরুজালেমে আর এক প্যালেস্টাইনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ‘প্যালেস্টিনিয়ান ইসলামিক জিহাদ’ (পিআইজে)-এর শীর্ষনেতা জিয়াদ আল-নাখালার যোদ্ধাবাহিনীও সক্রিয়। কোনও গোষ্ঠীই এখনও পর্যন্ত হামলার দায় স্বীকার করেনি।
গাজায় স্থলপথে হামলা চালানো এবং বোমাবর্ষণ বন্ধ করার ন্যূনতম শর্ত হিসাবে প্রতিদিন ১০ জন করে যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিতে হবে বলে জানিয়েছিল ইজরায়েল। বৃহস্পতিবার, যুদ্ধবিরতির শেষ দিনেও আটজন যুদ্ধবন্দিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। অন্যদিকে, ইজরায়েল ৩০ জন প্যালেস্তিনিয় বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। ফলে, যুদ্ধবিরতির সাতদিনে মোট ১০৫ জন যুদ্ধবন্দি এবং ২৪০ জন প্যালেস্তিনিয় বন্দি মুক্তি পেয়েছেন।
কাতার এবং মিশরের পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির মেয়াদ আরও বাড়ানোর জন্য চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে, তা শেষ পর্যন্ত কাজে আসেনি। এদিনই, ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “আমি হামাসকে নির্মূল করার শপথ নিয়েছি, তা করেই ছাড়ব।” এদিকে,মার্কিন বিদেশমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ইজরায়েল অসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে সম্মত হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, আমেরিকা ইজরায়েলকে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, দক্ষিণ গাজায় অসামরিক ব্যক্তিদের হতাহতের ঘটনা এবং উত্তরে বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করার ঘটনার পুনরাবৃত্তি করা যাবে না। ইজরায়েল সরকার এই মার্কিন প্রস্তাবের সঙ্গে একমত হয়েছে।