ইজরায়েলে নিষিদ্ধ লস্কর-ই-তৈবা, ভারতকে হামাস নিয়ে পাল্টা চাপ

তেল আবিব, ২২ নভেম্বর– লস্কর ই তৈবাকে নিষিদ্ধ করল ইজরায়েল সরকার৷ যা ভারতের ক্ষেত্রেও বিরাট স্বস্তির৷ তবে পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধে প্রথম থেকেই প্রকাশ্যে ইজরায়েলের পাশে থেকেছে ভারত৷ কূটনৈতিক মহল মনে করা হচ্ছে এই নিষিদ্ধ ঘোষণা তারই ‘পুরস্কার’৷ তবে ইজরায়েল দূতাবাসের বক্তব্য, ‘যদিও ভারত আমাদের কাছে এই বিষয়ে কোনও অনুরোধ করেনি, কিন্ত্ত ইজরায়েলের পক্ষ থেকে লস্কর ই তৈবাকে বেআইনি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের তালিকাভুক্ত করার সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ৷’
মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার প্রধান চক্রী লস্কর ই তইবাকে নিষিদ্ধ সংগঠনের তালিকাভুক্ত করল ইজরায়েল৷ এই সিদ্ধান্তের কথা মঙ্গলবার সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে জানিয়েছে দিল্লির ইজরায়েলি দূতাবাস৷ ওই পোস্টে বলা হয়েছে, আগামী ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে জঙ্গি হামলার ১৫ বছর৷ তেল আভিভ লস্করকে একটি জঙ্গি সংগঠন হিসেবে মনে করে৷ সেই সঙ্গে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ লস্কর সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে ইজরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘যারা আমাদের বিরুদ্ধে নাশকতা চালায় অথবা আমাদের সীমান্তে সক্রিয়, সেই সব জঙ্গি সংগঠনগুলিকে নিষিদ্ধ তালিকাভুক্ত করি আমরা৷ যারা রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের তালিকাভুক্ত, তাদেরও আমরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করি৷ পাশাপাশি ভারতের অথবা আমেরিকার নিষিদ্ধ তালিকায় রয়েছে, এমন সংগঠনও আমাদের তালিকায় স্থান পায়৷ গত কয়েক মাস ধরেই ইজরায়েলের বিদেশ এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তা ও মন্ত্রী এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন৷ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করার গুরুত্বকে আমরা তুলে ধরতে চাই৷’
ইজরায়েল দূতাবাসের বক্তব্য, ‘মুম্বই হামলায় যুক্ত এই সংগঠনটি মারাত্মক একটি জঙ্গি সংগঠন৷ শয়ে শয়ে ভারতীয় এবং অন্যান্যদের হত্যার পিছনে রয়েছে এরা৷ ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর এই সংগঠনের জঘন্য হামলা সমস্ত শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র এবং সমাজকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল৷’
তবে কূটনৈতিক মহলের মতে, ইজরায়েল জঙ্গী সংগঠনকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে ভারতের ওপর পরোক্ষ চাপ সৃষ্টিও করল৷ এর পরিবর্তে ভারত যাতে হামাসকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসাবে তালিকাভুক্ত করে তাই চাইবে ইজরায়েল৷ উল্লেখ্য, এখনও পর্যন্ত ৪৪টি সংগঠনকে ভারত নিষিদ্ধ তালিকায় রাখলেও, হামাস তার মধ্যে নেই৷ পশ্চিম এশিয়ার রণনীতির ক্ষেত্রে ভারত বরাবরই যে ভারসাম্য রেখে এসেছে, সেই অবস্থান থেকেই হামাসকে তারা ওই তালিকাভুক্ত করতে চায় না আজও৷ কাতার বা ইরানের মতো দেশ পুরোপুরিভাবে হামাসের পাশে রয়েছে এটাও হিসাবের মধ্যে রাখতে হচ্ছে মোদী সরকারকে৷ সম্প্রতি ইজরায়েলের উপর হামাসের আক্রমণের পর কঠোর ভাষায় প্রধানমন্ত্রী মোদি নিন্দা করেছেন হামাসের৷