জিএলওএফ হয় যখন হিমবাহ গলা জল জমে সৃষ্ট হ্রদগুলো অতিরিক্ত পানি জমার কারণে বা ভূমিকম্পের মতো কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ফেটে যায়। গবেষণায় আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল যে, সিকিমের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দক্ষিণ লোনাক হ্রদ ১৪টি বিপজ্জনক হ্রদের মধ্যে একটি, যেখানে জিএলওএফ হওয়ার সম্ভাবনা ছিল।২০১২-২০১৩ সালে ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার এবং ইসরোর একটি সমীক্ষায় লোনাক হ্রদ সংক্রান্ত বিভিন্ন ঝুঁকি তুলে ধরা হয়েছিল। হ্রদ ফেটে বিপর্যয় হওয়ার সম্ভাবনা ৪২ শতাংশ বলেও ওই সমীক্ষায় দাবি করা হয়েছিল।
২০২১ সালেও উত্তর সিকিমের লোনাক হ্রদ নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। তবে তখনও বিষয়টি নিয়ে বিশেষ মাথা ঘামানো হয়নি। তবে শেষরক্ষা হলো না। বুধবার লোনাক হ্রদ ফেটে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় সিকিমের ২২ হাজারেরও বেশি মানুষের জীবনে প্রভাব পড়েছে।
এছাড়াও ২০১৬ সালে, লাদাখের ‘স্টুডেন্টস এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল মুভমেন্টের’ সোনাম ওয়াংচুক, জিএলওএফ নিয়ে সতর্ক করেছিলেন। জিএলওএফ রোধ করার জন্য হিমবাহ থেকে সৃষ্ট হ্রদে উচ্চ-ঘনত্বের পলিথিন পাইপ বসানো হয়েছিল।
২০২১ সালের একটি গবেষণাপত্রেও দক্ষিণ লোনাক হ্রদকে বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছিল, “লোনাক হিমবাহ ১৯৬২ থেকে ৪৬ বছরে প্রায় ২ কিলোমিটার পিছিয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত আরো ৪০০ মিটার পিছিয়ে গিয়েছে। ফলে লোনাক হ্রদে বিপদের সম্ভাবনা বেড়েছে। হ্রদ সংলগ্ন এলাকায় প্রচুর মানুষ বাস করে। ফলে তাদেরও বিপদ থেকে যাচ্ছে।”
২০০১ সালের ‘সিকিম হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিপোর্টে’ও হিমবাহ থেকে সৃষ্ট হ্রদ ফেটে সিকিমে বিপত্তি ঘটতে পারে বলে সতর্ক করা হয়েছিল।