দিল্লি, ২৯ আগস্ট – দেশে দ্রুত গতিতে নিজেদের ব্যবসার সমৃদ্ধি ঘটিয়েছে আদানি গ্রুপ। আদানি গ্রুপের আদানি পোর্টের দায়িত্ব রয়েছে গোতম আদানির ছেলে করুন আদানির হাতে। আদানি পোর্টসের ব্যবসা বেড়েছে। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গ্রিস সফরের পরে আদানি গোষ্ঠী গ্রিসের বন্দর অধিগ্রহণ করতে চাইছে বলে খবর প্রকাশ্যে এল।
এদিকে রাহুল গান্ধি সংসদে দাঁড়িয়ে অভিযোগ তুলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যে কোনও বিদেশ সফরের পরেই তাঁর বন্ধু শিল্পপতি গৌতম আদানি সে দেশে কোনও না কোনও বরাত পেয়ে থাকেন।
গ্রিসের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর, গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মোদির বৈঠকে ভারতের তরফে গ্রিসের একাধিক বন্দর অধিগ্রহণের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। কারণ আদানি গোষ্ঠী এ বিষয়ে আগ্রহী। প্রাথমিক ভাবে দু’টি বন্দরের দিকে আদানি গোষ্ঠীর নজর রয়েছে। নরেন্দ্র মোদি গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী কেরিয়াকোস মিটসোতাকিসকে বলেছেন, ভারতের পণ্য ইউরোপে যাওয়ার ‘গেটওয়ে’ হয়ে উঠতে পারে গ্রিস।
দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্রিকসের সম্মেলনের পরেই গ্রিসে যান মোদি। চল্লিশ বছর পর এই প্রথম ভারতের কোনও প্রধানমন্ত্রী গ্রিসে গেলেন। শনিবার সকালে গ্রিস থেকে তিনি সরাসরি বেঙ্গালুরুর ইসরোয় পৌঁছে যান। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, “ বোধহয় এই কারণেই প্রধানমন্ত্রী আরও আগে বেঙ্গালুরু পৌঁছতে পারেননি।’’
গ্রিসে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উপরে জোর দেন। গ্রিসের প্রধানমন্ত্রীকে আগামী বছরের গোড়ায় দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। মোদির সঙ্গে এ দেশের শিল্পমহলের প্রতিনিধিরাও সঙ্গে যান। গ্রিসের শিল্পমহলকে ভারতের বিশাল বাজারের সুযোগ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। গ্রিসের বন্দরগুলিকে কাজে লাগিয়ে কী ভাবে ভারতের পণ্য ইউরোপের বাজারে পৌঁছতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। গ্রিসের সরকারি সূত্র উদ্ধৃত করে সে দেশের সংবাদমাধ্যম জানায় , গ্রিস যাতে ভারতের কাছে ইউরোপে পণ্য পরিবহণের ‘ট্রানজ়িট হাব’ হয়ে উঠতে পারে, সে দিকে মোদির বিশেষ নজর ছিল। আদানি গোষ্ঠীর ২ টি বন্দরের দিকে নজর রয়েছে। প্রথমটি কাভালা, দ্বিতীয়টি ভলোস। আলেকজান্দ্রোউপলি নামে অন্য একটি বন্দরের দিকেও আদানি গোষ্ঠীর নজর রয়েছে। এই বন্দরগুলি ভারতের হাতে এলে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি বা আদানিদের মালিকানাধীন ইজ়রায়েলের হাফিয়া বন্দরের মাধ্যমে ভারতীয় পণ্য সহজে ইউরোপের বাজারে পৌঁছতে পারবে।
মোদির সফরের পর গ্রিসের বন্দরে আদানি গোষ্ঠীর লগ্নির সম্ভাবনা নিয়ে গ্রিস সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও কেন্দ্রীয় সরকারের কেউ এ নিয়ে মুখ খোলেননি। এই খবর ভুল বলেও দাবি করেননি। বিরোধী শিবির মনে করছে, প্রধানমন্ত্রীর সফরের হাত ধরে আদানি গোষ্ঠী গ্রিসের বন্দর অধিগ্রহণ করলে তা বিরোধীদের কাছে নতুন হাতিয়ার হয়ে উঠবে।